নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর গ্রামে নতুন একটি গ্যাসকূপের সন্ধান মিলেছে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার অম্বরনগর ইউনিয়নের ওয়াছেকপুর গ্রামে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) এই নতুন গ্যাস কূপে খনন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করে।
প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ খনন প্রকল্প। এর আগে গত ২২ এপ্রিল কূপ খননের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ড্রিলিং রিগ’ স্থাপন করা হয়। এরপর থেকে বাপেক্সের দুই শতাধিক প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক এ কর্মযজ্ঞে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন। আগামী ১২০ দিন চলবে এ খননের কাজ।
কূপটির ড্রিলিং ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘দুপুরে কূপ খননের জন্য ‘ড্রিলিং রিগ’ স্থাপন করা হয়। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে খনন কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কূপটি মাটির নিচে ৩২০০ মিটার খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ৪টি জোনে প্রাকৃতিক গ্যাস মিলতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। খনন শেষে প্রতিটি জোনে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। যা বাখরাবাদের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করা হবে।’
নোয়াখালীর স্থানীয় এক বাসিন্দা মোরশেদ আলম কালবেলাকে বলেন, ‘নতুন গ্যাস কূপ থেকে সফলভাবে গ্যাস উত্তোলন করা গেলে সেটি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। এর পাশাপাশি নোয়াখালীর মানুষ হিসেবে আমাদের জোর দাবি হচ্ছে, বিভিন্ন বাসাবাড়িতেও নতুন এ কূপের উত্তোলিত গ্যাস থেকে নতুন সংযোগ দিয়ে গ্যাস সরবরাহ করা।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাপেক্সের ৩টি কূপের প্রকল্প পরিচালক প্রিন্স মো. আল হেলালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাপেক্সের খনন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী গাজী মো. মাহবুবুল হক।
এ সময় বাপেক্সের প্রকৌশল বিভাগের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, ভূতাত্ত্বিক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শামসিয়া মুক্তাদির, বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ খনন প্রকল্পের ড্রিলিং ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
‘দেশের অর্থনীতি ও শিল্পায়নকে আরও গতিশীল করতে আমাদের বাড়তি গ্যাস প্রয়োজন।’ এ প্রতিপাদ্যে মানুষের চাহিদা পূরণে দেশীয় জ্বালানি অনুসন্ধান ও উৎপাদনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার। ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৪৬টি নতুন অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খনন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাপেক্স বলছে, এটির আগে নোয়াখালীর এ অঞ্চল তথা বেগমগঞ্জে ১৯৭৬ সালে প্রথম কূপের সন্ধান মিলে, ১৯৭৮ সালে দ্বিতীয় কূপের সন্ধান মিললে সেগুলো ড্রিলিং করা হয়ে। তবে পরে ওই দুটি কূপে কোনো গ্যাস পাওয়া যায়নি। ২০১৩ সালে তৃতীয় কূপের সন্ধান মিললে ড্রিলিং শেষে ওই কূপ থেকে গ্যাস প্রোডাকশনে যায় এবং ২০১৮ সালে একই কূপে ওয়ার্কওভার করে এখন প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন