লোহার ওপর রুপা গেলিয়ে তাতে বিভিন্ন আকৃতি দিয়ে নূপুর, আংটি, হাতের চুড়ি, মাজার বিছাসহ বিভিন্ন অলংকার তৈরি করে সংসার চালাচ্ছেন অমরেশ মহাজন। তিনি চাঁদপুরের হাইমচরের চরভৈরবীর ৮নং ওয়ার্ডের পারাবগুলার বাসিন্দা।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) রাতে চরভৈরবী লঞ্চঘাট বাজার এলাকায় গেলে এ তথ্য পাওয়া যায়। অমরেশ মহাজন (৪৩) হচ্ছেন হরিপদ মহাজন ও উপাসনা রানীর সংসারের ২ মেয়ে ও ১ ছেলের মধ্যে সবার বড়।
জানা যায়, পারিবারিক অভাব অনটনে পড়ালেখায় খুব একটা এগোতে পারেননি অমরেশ মহাজন। তখন থেকেই বাবার পরামর্শে পরিবারের হাল ধরতে রুপার কাজে মনোযোগী হন অমরেশ। এরপর বিভিন্ন স্থানে কাজ শিখে দীর্ঘ ২২ বছর সুনামের সঙ্গে তিনি নিজেই এখন রুপার কারিগর। চরভৈরবীর লঞ্চঘাট বাজারে আনন্দ শিল্পালয় নামে ভাড়া বিল্ডিংয়ে তার একটি দোকান রয়েছে। সেখানেই সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করে তিনি সংসার চালাচ্ছেন।
আরও জানা যায়, অমরেশ মহাজন লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের মলিনা রানীকে বিয়ের পর তাদের সংসারে ১ ছেলে ও ৩ মেয়ে রয়েছে। যারা সবাই পড়াশোনা করছে। তার মতো এত ভালো কারিগর পুরো ইউনিয়নে আর নেই। সংসার খরচ চালিয়ে অমরেশ নিজেকে সমাজসেবায়ও নিবেদিত রাখেন।
এক সাক্ষাৎকারে অমরেশ মহাজন বলেন, ছোটবেলা থেকেই অভাবকে নিত্যদিনের সাথী করে এগোচ্ছি। জীবন জীবিকার এখন একমাত্র কাজ লোহায় রুপা পিটিয়ে অলংকার তৈরি করা। দোকানে কেচি, হাতুর, বাডল, তার টানা মেশিন, ডিজিটাল মাপার স্কেল, একটি সিন্দুক এবং বসার মাদুরই সারা দিনে আমার কাজের সাথী। একের পর এক মেঘনা নদীর ভাঙনে আমার সব তছনছ হয়ে জীবন টিকে থাকাই কষ্টের হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও সততার সঙ্গে জীবন কাটাচ্ছি। আমার সাধ্য নাই তবে সাধ আছে নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে হলেও কোনো এক সময় জনসেবা করব।
মন্তব্য করুন