কক্সবাজারের চকরিয়া সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মমতাজ বেগম ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গত ২৭ এপ্রিল দেশের শীর্ষ গণমাধ্যম দৈনিক কালবেলায় ঘুষ লেনদেরে তথ্যবহুল সংবাদ প্রচারের পর সোমবার (২৯ এপ্রিল) তাদের বরখাস্ত করা হয়। সামজসেবা অধিদপ্তরের যুগ্মসচিব (পরিচালক প্রশাসন ও অর্থ) সৈয়দ মো. নুরুল বাসির এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়রুল আলম সেখ স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপণে এ তথ্য জানা যায়।
প্রজ্ঞাপণে বলা হয়, ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩(খ) ও (ঘ) মোতাবেক অসদাচরণ ও দুর্নীতির আওতাভুক্ত এবং একই বিধিমালায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সেহেতু, মমতাজ বেগম ও আমজাদ হোসেনকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৩৯ (১) ধারা এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর বিধি ১২(১) অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। অবিলম্বে এ আদেশ কার্যকর হবে। বরখাস্ত থাকা অবস্থায় তারা বিধি মোতাবেক খোরাকি ভাতা পাবেন। তবে তাদের নিয়মিত কর্মস্থলে হাজিরা দিতে হবে।
এর আগে ২৭ এপ্রিল দেশের শীর্ষ গণমাধ্যম দৈনিক কালবেলায় অনলাইন সংস্করণ এবং মাল্টিমিডিয়ায় ‘দুই লাখের বিল পেতে ৮০ হাজার টাকার ঘুষ!’ শিরোনামে সংবাদ প্রচার পেলে দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ে। এরপর মামতাজ বেগম ও আমজাদ হোসনের ঘুষ বাণিজ্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
তথ্য মতে, কক্সবাজারের চকরিয়া হারবাং মধ্যম পহরচাঁদা এতিমখানার অনুদানের ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা পেতে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন ও অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মমতাজ বেগম এতিমখানার সভাপতি রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। প্রথম কিস্তির টাকা উত্তোলনের পর মমতাজ বেগমকে নগদ ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দেয়া হয়। এ ভিডিওচিত্র দৈনিক কালবেলার হাতে আসার পর সংবাদ প্রচার করে কালবেলা। এরপর দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়লে বিভিন্ন গণমাধ্যমও সংবাদ প্রচার করে। এ অবস্থায় দুর্নীতিগ্রস্ত দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শুধু এতিমখানা নয়, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও শিক্ষা উপবৃত্তি বই পেতে প্রতিজন উপকারভোগীর কাছ থেকে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
এতিমখানার সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, যেখানে এতিমখানা তাদের হাত থেকে রক্ষা পায় না সেখানে সাধারণ মানুষ কী পরিমাণ ভুক্তভোগী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এতদিন পর হলেও দুর্নীতিগ্রস্ত দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় আমি খুশি। এখান থেকে অনেকে শিক্ষা নিতে পারেন।
জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মমতাজ বেগম ও চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ আমজাদ হোসেনকে ফোন করা হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও উত্তর মেলেনি।
মন্তব্য করুন