আতাউর রহমান, ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৪, ১০:৩৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

নয়নাভিরাম শিরীষ ফুলে সেজেছে প্রকৃতি

ব্রাহ্মণপাড়ার সড়কের পাশে ফুটে আছে শিরীষ ফুল। ছবি : কালবেলা
ব্রাহ্মণপাড়ার সড়কের পাশে ফুটে আছে শিরীষ ফুল। ছবি : কালবেলা

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে ফুটে আছে শিরীষ ফুল। শিরীষ ফুলের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে বিমোহিত হচ্ছেন ফুলপ্রেমীসহ নানা বয়সী পথচারী। ছোট ছোট পাতা ছাপিয়ে গাছের শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে থোকায় থোকায় শিরীষ ফুটে থাকার সৌন্দর্যে প্রকৃতিতেও যেন এক নতুনমাত্রা যোগ হয়েছে।

হোক বসন্ত বা গ্রীষ্ম, ফুলের সৌন্দর্য সবসময়ই মানুষকে আকৃষ্ট করে এবং পরিবেশকে মনোরম করে তোলে। শিরীষ ফুলের মনমাতানো সৌন্দর্যে প্রকৃতি সেজেছে অপরূপ সাজে। কিশোরী ও তরুণীরা এ ফুল সৌন্দর্য বাড়াতে খোঁপায় ও চুলের বেনিতে পড়ছে। কোমলমতি শিশুরাও ঝরা এ ফুল নিয়ে খেলা করছে। এ ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন সৌন্দর্য প্রেমীরা। এ ফুলের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য নজর কাড়ছে মানুষসহ পাখিদেরও। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি তীব্র রোদ এড়াতে পথিক ও শ্রমজীবীরা শিরীষের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছেন। উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা ও বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।

বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান কবি সাহিত্যিকের কলমেও উঠে এসেছে শিরীষ ফুলের সৌন্দর্য। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার কবিতায় শিরীষ ফুলকে তুলে এনেছেন এভাবে, ‘প্রাঙ্গণে মোর শিরীষ শাখায় ফাগুন মাসে কী উচ্ছ্বাসে, ক্লান্তিবিহীন ফুল ফোটানোর খেলা।’ প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন, ‘শিরীষ-গাছে পেঁচা ডাকছে বুঝি-/অন্ধকারের ভিতর কেমন শিরশির মধুরতা।’

জানা গেছে, আকারে বটগাছ সদৃশ্য শিরীষ এর বৈজ্ঞানিক নাম Albizia lebbeck । এটি Albizia গণের একটি প্রজাতি। এদের কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে। এর ফুল দেখতে খুব সুন্দর হয়। এই গাছের আদি নিবাস ইন্দোনেশিয়া, উত্তর অস্ট্রেলিয়া ও নিউগিনিতে। এ ছাড়াও মালেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তান ও চীনেও এই গাছ জন্মে। অ্যামেরিকা ও আফ্রিকায়ও এই গাছের কদর বেড়েছে। এ দেশে শিরীষকে কড়ই, সৃষ্টি কড়ই, রেইনট্রি বা এন্ডিকড়ই নামেও চেনে অনেকে।

শিরীষগাছ বট গাছের মতো অনেক জায়গা দখল করে। এই গাছ লম্বায় ১৮ থেকে ৩০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। এর পাতাগুলো ছোট ছোট আকারের সবুজ রঙের হয়। এর ফুল গোলাপি ও সাদার মিশেল, সাদা ও হলুদ রঙের মিশেলে চিকন চিকন কেশরযুক্ত নজরকাড়া হয়ে থাকে। এদের কয়েকটি প্রজাতি হওয়ায় অন্য রঙের ফুল হয় শিরীষের। ফুল শেষে এই গাছে ফল ধরে। ফলের বীজের মাধ্যমে এ গাছ বংশবিস্তার করে থাকে। এ গাছের কাঠ শক্ত ও মজবুত হয়।

আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, শরীষের রয়েছে ঔষধি গুণ। এই গাছের মূলের ছাল চূর্ণ করে নিয়মানুযায়ী ব্যবহার করলে একজিমা নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং হাঁপানি রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। বিষাক্ত পোকামাকড়ের বিষক্রিয়া নষ্ট করতে এই গাছের ছাল ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়াও চোখ ওঠা রোগে এই গাছের ফলের বীজ চোখে কাজলের মতো ঘষলে আরোগ্য পাওয়া যায়।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউনানি চিকিৎসক সোহেল রানা কালবেলাকে বলেন, শিরীষ কাঠ গাছ হলেও এর ঔষধি গুণ রয়েছে। এই গাছের মূলের ছাল ও গাছটির ফলের বীজ নানা রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। উপজেলার বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক, গ্রামীণ সড়কসহ বাড়ির পাশে এই গাছ দেখা যায়। এ ছাড়াও এটি প্রকৃতিবান্ধব গাছ। এটি ঝড়ের কবল থেকেও রক্ষা করে থাকে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পানি কি সত্যিই ত্বক উজ্জ্বল করে

তিশার বিরুদ্ধে ভারতীয় প্রযোজকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

ভূমিকম্প / বুয়েট বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে ঢাবিতে হল পরিদর্শন শুরু

কংক্রিট নির্ভর উন্নয়ন ঢাকাকে অনিরাপদ করেছে : পরিবেশ উপদেষ্টা

সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য রুপালি বরখাস্ত, এলাকায় মিষ্টি বিতরণ

মহাসড়কের পাশে মিলল কাপড়ে মোড়ানো নবজাতক 

ইউআইইউতে ভূমিকম্পের ঝুঁকি এবং নিরসন বিষয়ক সেমিনার

বাংলাদেশে আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের সেনা-বিজিপির ৫ সদস্য

হাওর থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার অপহরণ মামলার আসামি সম্রাট

১০

স্মার্টফোন যেভাবে ভূমিকম্প শনাক্ত করে

১১

ছাত্রদলের ১ ইউনিটের কমিটি স্থগিত

১২

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে নেবে ১ হাজার ১৫২ জন

১৩

এরিয়া সেলস ম্যানেজার পদে নিয়োগ দিচ্ছে ট্রান্সকম ইলেকট্রনিক্স

১৪

বাংলাদেশ সি-সুইট অ্যাওয়ার্ডসের ‘সিইও অব দ্য ইয়ার ২০২৫’ সিটি ব্যাংকের মাসরুর আরেফিন

১৫

ইসরায়েলসহ মিত্রদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি, ১৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

১৬

জাতীয় ইমাম-খতিব সম্মেলনে চরমোনাই পীর / আলেমদেরকে ক্ষমতার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহারের কোনো সুযোগ দেওয়া যাবে না

১৭

ইপিআই টিকাকেন্দ্রে আগুন

১৮

কৃষি ব্যাংক স্টাফ কলেজে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স অনুষ্ঠিত

১৯

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা

২০
X