চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৪, ০৮:৩৩ পিএম
আপডেট : ২৫ মে ২০২৪, ১০:৫৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঘূর্ণিঝড় রিমাল সচেতনতায় নদীর তীরে তীরে চলছে মাইকিং

পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদী তীর এলাকায় মাইকিং করেছে চাঁদপুর নৌথানা পুলিশ। ছবি : কালবেলা
পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদী তীর এলাকায় মাইকিং করেছে চাঁদপুর নৌথানা পুলিশ। ছবি : কালবেলা

ঘূর্ণিঝড় রিমাল থেকে নিরাপদে থাকতে জনসাধারণকে সচেতন করার লক্ষ্যে পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদী তীর এলাকায় মাইকিং করেছে চাঁদপুর নৌথানা পুলিশ।

শনিবার (২৫ মে) সন্ধ্যায় চাঁদপুর নৌথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম এ মাইকিং করেন।

মাইকিংকালে লঞ্চ টার্মিনাল, বড় স্টেশন মোলহেড এলাকাসহ নদী তীরবর্তী স্থানে বসবাসরত বাসিন্দা এবং চর এলাকার জনসাধারণকে সচেতন করার লক্ষ্যে নৌপথে ট্রলার নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণার অংশ হিসেবে মাইকিং চালানো হয়।

এসময় চাঁদপুর নৌথানার এসআই সাজ্জাদ হোসাইনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে চাঁদপুর নৌথানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালকে ঘিরে জনসাধারণের জান মাল নিরাপত্তা, গবাদিপশু, শিশুসহ সবার প্রয়োজনীয় খাবার নিয়ে নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য চাঁদপুর নৌথানা পুলিশের পক্ষ থেকে সচেতনমূলক মাইকিং করে সতর্ক করেছি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। নৌপুলিশ সবসময় জনগণের পাশে রয়েছে। তা ছাড়া নৌযান শ্রমিকদের সরকারি নির্দেশনা মেনে নিরাপদে যাতায়াত করাসহ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ স্থানে অবস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের কোন সংকেতের কী মানে?

ঝড়ের সময় আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে ১১টি সংকেত নির্ধারিত আছে। এই সংকেতগুলো সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে ভিন্ন বার্তা বহন করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সংকেতগুলোর বিস্তারিত-

১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত : জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার। ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে।

২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত : গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে।

৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত : বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগকবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার হতে পারে।

৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত : বন্দর ঘূর্ণিঝড়কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় হয়নি।

৫ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৬ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৭ নম্বর বিপদসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরের ওপর বা এর কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৮ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

৯ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

১০ নম্বর মহাবিপদসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে।

১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত : আবহাওয়ার বিপদসংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।

ঘূর্ণিঝড়ে নিরাপদ থাকতে কী করবেন?

ঘূর্ণিঝড়ের সময় নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে কী করবেন, আর কী করবেন না-

১. বাড়ির কাছাকাছি থাকা মরা গাছের ডাল ছেঁটে ফেলুন। গাছের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। যাতে বাড়ির ওপর এসে না পড়ে।

২. টিনের পাতলা শিট, লোহার কৌটা যেখানে সেখানে পড়ে থাকলে এক জায়গায় জড়ো করুন। না হলে ঝড়ের সময় এর থেকে বিপদ হতে পারে।

৩. কাঠের তক্তা কাছে রাখুন যাতে কাঁচের জানালায় সাপোর্ট দেওয়া যায়।

৪. ফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান্য জরুরি বৈদ্যুতিক যন্ত্র আগে থেকেই চার্জ দিয়ে রাখুন।

৫. হালকা শুকনো খাবার রাখুন বড়সড় বিপদের জন্য।

৬. পর্যাপ্ত পানি মজুত রাখুন।

৭. যে ঘরটি সবচেয়ে নিরাপদ সেখানে আশ্রয় নিন।

৮. বাড়ির পোষ্য ও গবাদি পশুদেরও নিরাপদ স্থানে এনে রাখুন।

৯. বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঠিক থাকলে টিভি খবরে নজর রাখুন। না হলে রেডিও চালিয়ে রাখতে পারেন।

১০. ঝড় থামতেই বাইরে বের হবেন না। অপেক্ষা করুন কারণ ঘূর্ণিঝড় চক্রাকারে ঘোরে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড় রেমাল
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাজা যুদ্ধবিরতিতে উভয়পক্ষ একমত হয়েছে : ট্রাম্প

পুলিশের কাছ থেকে মাদক ব্যবসায়ীকে ছিনতাই, এসআইসহ আহত ২

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

বিক্ষোভে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

০৯ অক্টোবর : আজকের নামাজের সময়সূচি

একাধিক দেশের পাসপোর্টধারীরাই ‘সেফ এক্সিটের’ তালিকা করে: আসিফ মাহমুদ

শহিদুল আলমের মুক্তির জন্য সোচ্চার হতে হবে : তাসলিমা আখতার

স্থানীয় সমস্যা সমাধানে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস আনোয়ারুজ্জামানের

সবাইকে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব: নীরব

১০

‘হামজা আমার দলে হলে বেঞ্চেই বসে থাকত’

১১

লন্ডনে টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়রের সঙ্গে বাসস চেয়ারম্যানের মতবিনিময়

১২

আফগানদের কাছে হারার পর যা বললেন মিরাজ

১৩

অল্প পুঁজি নিয়ে আফগানদের সাথে পারল না বাংলাদেশ

১৪

‘দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রবীণদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে’

১৫

রাবেতাতুল ওয়ায়েজীনের সঙ্গে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের মতবিনিময়

১৬

ডিএনসিসি এলাকায় টাইফয়েডের টিকা পাবে ১৩ লাখ শিশু

১৭

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৯ কোটি ডলার

১৮

৭ বছর পর শহীদ জিয়ার মাজার জিয়ারত করলেন খালেদা জিয়া

১৯

ফার্মগেটে ককটেল বিস্ফোরণ

২০
X