বগুড়া শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজা রহমান বুলার বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
শনিবার (২২ জুলাই) বিকেলে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধনে এলাকার নারী-পুরুষ অংশ নেন। তাদের অভিযোগ, সুজা রহমান বুলাকে দিনে মানুষ চেনে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে। আর রাতের বেলা তিনি আবির্ভূত হন ছিনতাইকারী হিসেবে। তার অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বগুড়া শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকার পাশাপাশি বুলা হাড্ডিপট্টি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে মোটর শ্রমিক বিশ্রামাগার কমিটিরও সভাপতি। বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ সংলগ্ন কামারগাড়ি এলাকায় তার বন্ধন স্টুডিও অ্যান্ড কম্পিউটার নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আজিজুল হক কলেজের বিভিন্ন সড়কে তিনি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়ে তার অফিসে বসে মনিটরিং করেন।
ভুক্তভোগীরা বলেন, গভীর রাত পর্যন্ত অফিসে বসে থাকেন বুলা। সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে তার সহযোগীদের দিয়ে রিকশাযাত্রী কিংবা মোটরসাইকেল আরোহীকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন মাদক দিয়ে ছবি তুলে পুলিশের ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয় সর্বস্ব। ভুক্তভোগীদের অধিকাংশ বহিরাগত হওয়ায় কেউ থানা-পুলিশে অভিযোগ করার সাহস পান না। এভাবে দিনের পর দিন বুলার অত্যাচারে অতিষ্ঠ লোকজন কয়েক দিন আগে তার প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
এদিকে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের এক দিন আগে আত্মগোপনে থেকে ফেসবুক লাইভে এসে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ এ নেতা। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের শিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, বগুড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল মতিন সরকার ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইফতেখার হাসান ওরফে যিশু হাজির ভয়ে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। মতিন সরকার ও যিশু হাজির লোকজন তার দোকান ভাঙচুর করেছে।
এ বিষয়ে বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইফতেখার হাসান যিশু এই অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বুলা ছিনতাই ও মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। তার কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগ নেতারা বিব্রত। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার প্রক্রিয়া চলছে। এলাকাবাসী বুলার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তার আস্তানা ভাঙচুর করে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন করেছে।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল মতিন বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে বুলা এলাকায় মানুষের দোকান দখল, মারধর ও চাঁদাবাজি করছিলেন। মাদকাসক্ত হওয়ায় তার মস্তিষ্কের সমস্যা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি তিনি শহর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাদৎ হোসেন শাহীন ও তার ছেলেকে মারধর করেন। বুলার চিকিৎসা করাতে তার পরিবার ও স্বজনদের বলা হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার ওসি)সাইহান ওলিউল্লাহ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বুলার বিরুদ্ধে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তার প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি থানায় অভিযোগ করেননি। কয়েক দিন আগে শাহিন নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা বুলার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছিলেন।
মন্তব্য করুন