মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে লোকালয় থেকে বিশাল আকৃতির একটি অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। শ্রীমঙ্গলস্থ বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন এ কার্যক্রম পরিচালনা করে।
রোববার (২৩ জুন) সকালে শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের আনসার ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পের পাশ থেকে অজগর সাপটি উদ্ধার করেন বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল।
সজল দেব জানান, সকালে অজগর সাপটিকে দেখে স্থানীয়রা রাসেল ভাইপার ভেবে আতঙ্কিত হয়ে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনকে খবর দেয়। সাপটির কোনো ক্ষতি না করার পরামর্শ দিয়ে দ্রুত ওই স্থানে গিয়ে অজগরটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে আসি। এ সময় বনবিভাগের এফডি সুব্রত সরকার উপস্থিত ছিলেন। উদ্ধার করা সাপটি ১২ ফুট লম্বা ও ওজন প্রায় ২০ কেজি। পরে সাপটিকে বনবিভাগ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বাংলাদেশ অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা বলেন, অজগর নির্বিষ সাপ। এটি নিশাচর ও খুবই অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া নড়াচড়াও করে না। এই প্রজাতিটি গাছে একাকী বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়া বাধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে এদের প্রজননকাল। দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযুক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়। সাপটি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাদ্য হিসেবে এরা ইঁদুর, কচ্ছপের ডিম, সাপ, বন মুরগি, পাখি, ছোট বন্যপ্রাণী ইত্যাদি খায়। সাপটি নিজের আকারের চেয়েও অনেক বড় প্রাণী খুব সহজেই গিলে খেতে পারে।
তিনি বলেন, চামড়ার জন্য সাপটি পাচারকারীদের লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ফলে আমাদের বনাঞ্চল থেকে এটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল-২ অনুযায়ী এ বন্যপ্রাণীটি সংরক্ষিত, তাই এটি হত্যা বা এর যে কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এর আগে গত ২২ জুন শ্রীমঙ্গল উপজেলার পৃথক তিনটি স্থান থেকে ১টি অজগর, ১টি বেত আঁচড় সাপ ও ২টি চিল উদ্ধার করে বনবিভাগকে হস্তান্তর করে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য করুন