প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের পর দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের সহযোগী ও হালট্রিপ কেলেঙ্কারির হোতা মোহাম্মদ তাজবীর হাসানকে জামিন দিয়েছেন আদালত। তবে দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার থাকায় এখনই মুক্তি মিলছে না তার।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে তার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে জামিনের এ আদেশ দেন। এ সময় বিচারক বলেন, যেহেতু আসামির বিরুদ্ধে অন্যান্য মামলা প্রক্রিয়াধীন সে ক্ষেত্রে এখানে তার রিমান্ড ও কারাগারে আটক রাখার কোনো আবশ্যকতা নেই।
শুনানির আগে কারাগার থেকে এদিন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। গত ৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনের ওপর তার আইনজীবী সৈয়দা ফাহমিদা হোসেন রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর কাইয়ূম হোসেন নয়ন জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত এক হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী বলেন, গত ৪ অক্টোবর তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ওইদিন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তার বিরুদ্ধে অন্যকোনো মামলা আছে কিনা সে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল ও রিমান্ড শুনানির জন্য ১৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। আজ এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন মিয়া প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেখানে ২০২২ সালের দুর্নীতির এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। সেক্ষেত্রে ৫৪ ধারার এ মামলায় তাকে জামিন দেওয়া হলেও দুর্নীতির মামলায় প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট মূলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালতে দুদকের সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্র জানা গেছে আগামী ২০ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় আসামি তাজবীরকে গ্রেপ্তার দেখানোসংক্রান্ত বিষয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে শুনানি হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা তাকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করেন। শনিবার (৪ অক্টোবর) তাকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। ওইদিন বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সঙ্গে ১৪ অক্টোবর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।
তুরস্কে যাওয়ার পথে তাজবীরকে আটক করা হয়। আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি তুরস্কসহ আরও একটি দেশের নাগরিকত্ব ও পাসপোর্ট নিয়েছেন। গোয়েন্দা তথ্য মতে, তিনি পি কে হালদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। সেজন্য তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন