‘তর ভাগ্য ভালো তকে জানে মারিনি, এইসব যদি প্রশাসনের কাছে যায় তাহলে জানে মেরে ফেলব’- এসব কথা বলে হুমকি দেওয়া হয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সৈয়দ মুজতবা আলী হলের সৈকত রায় নামের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে। এর আগে ওই হলের ৪২০ নম্বর কক্ষে এসে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার বিছানাপত্র কক্ষ থেকে বের করে নিচ তলার হলগেটে নামিয়ে দেন। গালাগালের পাশাপাশি হত্যার হুমকি দিয়ে তাকেও হল থেকে বের করে দেয় তারা।
বুধবার (১৬ আগস্ট) রাত ১টার দিকে কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার সময় তারা বলেন যদি প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করা হয় তাহলে তাকে মেরে ফেলা হবে। ছাত্রলীগ নেতা সীমান্তের অনুসারীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে প্রক্টর ও হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পেট্রোলিয়াম ও মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সৈকত রায়। তিনি সৈয়দ মুজতবা আলী হলের ৪২০ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গতকাল রাত ১২টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা আজিজুল ইসলাম সীমান্তের ১২ থেকে ১৫ জন অনুসারী তার কক্ষে এসে তার রুমমেটের সঙ্গে তর্কে জড়ান এবং মারধর শুরু করেন। সৈকত বাধা দিলে তাকেও মারধর করা হয়। পরে প্রাধ্যক্ষকে মুঠোফোনে কল দেওয়ার জন্য তিনি হলের চতুর্থ তলা থেকে তৃতীয় তলায় নামলে আজিজুল ইসলামের সঙ্গে তার দেখা হয়।
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, আজিজুল ইসলাম জোর করে সৈকতের মুঠোফোন কেড়ে নেন এবং তাকে ৪২০ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মারধর করা হয়। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার বিছানাপত্র কক্ষ থেকে বের করে নিচ তলার হল গেটে নামিয়ে দেন এবং গালাগাল করে এবং হত্যার হুমকি দিয়ে তাকে হল থেকে বের করে দেয়। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার মুঠোফোনে ফ্লাশ দিয়ে জরুরি ফাইল ডিলিট করে দেওয়ার পাশাপাশি ৩ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে নেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সৈকত রায় বলেন, রাত ১২টার দিকে ছাত্রলীগের কয়েকজন আমার রুমে এসে আমার রুমমেট মেহেদী হাসানকে ফেসবুকে একটা ইসলামিক পোস্ট দেওয়ায় তাকে মারধর করে। একপর্যায় তারা বাইর থেকে রুম তালা দিতে গেলে আমি বাধা দেই। পরে তারা আমাকে গালাগাল করে এবং হত্যার হুমকি দিয়ে রুম থেকে বের করে দেন। হল থেকে বের করে দেওয়ায় এখন আমি বাড়িতে চলে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আজিজুল ইসলাম সীমান্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কালবেলাকে বলেন, রাতে হলে সিনিয়র-জুনিয়র ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে শুনি। আমিও পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি ও হল প্রসাশনকে বিষয়টি জানিয়েছি। প্রসাশন বলেছে তারা সবার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করে দিবেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, প্রভোস্ট বডির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে। এ ব্যাপারে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা দ্রুতই এর সমাধান করে দিবেন। তবুও যদি হল কর্তৃপক্ষ সমাধান করতে না পারে তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন।
মন্তব্য করুন