ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জুলাই অভ্যুত্থানবিরোধী ভূমিকা পালনকারী ১৯ শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রত্যেক শিক্ষককে পাঠানো পৃথক নোটিশে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের হুমকি, গালাগালি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করানোর অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে, গত রোববার (১৭ আগস্ট) অভ্যুত্থানবিরোধী ভূমিকা চিহ্নিতকরণ কমিটির প্রতিবেদনে ১৯ শিক্ষক, ১১ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৩১ শিক্ষার্থীর নাম উঠে আসে।
শোকজকৃত শিক্ষকরা হলেন—ইইই বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক প্রক্টর ড. মাহবুবর রহমান, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন, আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ ও ড. তপন কুমার জোদ্দার; ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এইচ এম আক্তারুল ইসলাম, ড. মিয়া মো. রাসিদুজ্জামান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা বানু; বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন ও ড. বাকী বিল্লাহ, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন ও ড. শেলীনা নাসরীন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহজাহান মণ্ডল ও ড. রেবা মণ্ডল, সিএসই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান এবং মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাজেদুল হক।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারকে বিতাড়নের লক্ষ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুমকি-ধমকি, ভীতি প্রদর্শন, মারমুখী আচরণ, গালাগালি, মিছিলে উসকানিমূলক স্লোগান প্রদান এবং পুলিশি গ্রেপ্তার ও হয়রানি বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিপরীতে প্রত্যক্ষভাবে লিপ্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ অবস্থায় ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এ মর্মে আগামী ১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ভূমিকা নেওয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করতে গত ১৬ মার্চ ৫ সদস্যদের তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন। কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে উপাচার্যের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও পরে সময় বৃদ্ধি করে গত ১৩ আগস্ট প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। যেখানে ১৯ শিক্ষক, ১১ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ৩১ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ রয়েছে বলে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন