চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ৯৫ জনের নামে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও এক হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া সংঘর্ষের সময় নিরাপত্তা দপ্তর থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ফেরত দিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে প্রশাসন।
মঙ্গলবার (০২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাটহাজারী থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুর রহিম বাদী হয়ে এই মামলা করেন।
মামলায় ৯৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৮০০ থেকে ১০০০ জন উল্লেখ করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে ১৫৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এজহারে ৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৩০ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন জোবরা গ্রামে প্রথম দফা হামলার ঘটনা ঘটে। পরদিন ৩১ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একই এলাকায় আবারও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করে গুরুতর জখম করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তিরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়, যার পরিমাণ প্রায় ৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় দণ্ডবিধির ১৪৩, ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩২৩, ৩২৪, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ৪২৭, ৫০৬(২) ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু মাহমুদ কাওসার হোসেন জানান, মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাটহাজারী থানায় মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া নিরাপত্তা দপ্তরের লুট হওয়া দেশীয় অস্ত্র লুটপাটের ঘটনায় ডায়েরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তর থেকে লুট হওয়া রামদা, দা, রড, ছুরিসহ দেশি অস্ত্র ফিরিয়ে দিতে শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব ফিরিয়ে দেওয়া না হলে লুটের ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা জানানো হয়। সব মিলিয়ে এসব অস্ত্রের সংখ্যা ১৩০টি। গত ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন আবাসিক হলে অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জোবরা গ্রামবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় এসব অস্ত্র চুরি হয়। এসব অস্ত্র যাদের কাছে রয়েছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিরাপত্তা দপ্তরে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
মন্তব্য করুন