ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ড্রাইভার নিয়োগ নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের এক অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অডিওতে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে চুক্তির টাকা দিতে চাপ দিতে শোনা যায় আরাফাতকে। বুধবার (২২ নভেম্বর) রাতে সানজিদা আক্তার তানিয়া নামের ফেসবুক আইডি থেকে অডিওটি পোস্ট করা হয়।
পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়, ২০ লাখ, ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে এভাবেই প্রশাসনের সঙ্গে দীর্ঘদিন আঁতাত করে চাকরি বাণিজ্য করে যাচ্ছেন ইবি ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত। ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে ড্রাইভার পদে মিলনকে চাকরি দিয়েছে দাবি করে ওই পোস্টে আরও বলা হয়, মিলন টাকা দিতে গড়িমসি করায় কথোপকথনে ক্ষোভ ঝাড়ছেন আরাফাত।
ভাইরাল হওয়া সেই অডিওতে ইবি ছাত্রলীগের সভাপতিকে বলতে শোনা যায়, ‘এক মাস সময় নিয়ে ৩ তারিখের কথা বলে আজ ১৫ তারিখ অর্থাৎ দেড় মাস হয়ে গেল। কী করবে না করবে সেটা তো আমার দেখার বিষয় না। আমার টাকা দিয়ে দাও। মাগুরায় আমার এক ভাই আছে, ওকে দিলে ২৫ লাখ টাকা পেতাম। বদরুল আছে ও ২০ লাখ টাকা নিয়ে বসেছিল। ওই ভাই টাকা নিয়ে বসেছিল, ওই যে আমার বিপুল আছে, চেয়ে নিতে যাব কেন আমি। এক একজন ২০ লাখ টাকা খুশি হয়ে দিত, এগুলো আমার মুখের কথা বলতে দেরি। ওর চাকরির জন্য হাবিবুরের চাকরি হলো না হাবিবুর তো আমার ভাগ্নে হয়।’
তাকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘আমি তো একদম সাইলেন্ট হয়ে আছি, তাহলে ও তো হিসাব-নিকাশ ক্লিয়ার করবে। ও ১০-২০ হাজার কম দিবি আরও কম দিক আমার তো কম নিতি (নিতে) সমস্যা নেই।’
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) ‘Islamic University Campus’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে ছাত্রলীগ সভাপতির আরও একটি অডিও পোস্ট করা হয়। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘ইবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের নিয়োগ বাণিজ্যের দ্বিতীয় এপিসোড ভাইরাল।’ ওই অডিওতেও ছাত্রলীগ সভাপতিকে টাকা চাইতে শোনা যায়।
তবে ভাইরাল হওয়া অডিওতে কণ্ঠটি তার নয় বলে দাবি করে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত কালবেলাকে বলেন, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমি অডিওটি শোনার পর আমি এটা নিশ্চিত যে এটা আমি না। ক্যাম্পাসের বাইরে থাকায় আমি এর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে থানায় জিডি করার জন্য বলেছি। এর পেছনে যে আছে আমি তার বিচার চাচ্ছি। এ ছাড়া এর সঙ্গে যদি আমার বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা থাকে তাহলে আমি আমার পদ ছেড়ে চলে যাব।’
এ বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ‘নির্বাাচনকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করা হচ্ছে। এগুলো সুপার ইডিট বোঝাই যাচ্ছে। ক্যাম্পাসে কার নিয়োগ হবে, কে নিয়োগ পাবে এগুলো নিয়োগ বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম কালবেলাকে বলেন, ‘আমি বিষয়টা শুনেছি। আমি নির্বাক। একটা ড্রাইভার কীভাবে ২০ লাখ টাকা দেয়? নিয়োগগুলো হয়তো আমার সময় হতে পারে, তবে নর্মালিই হয়েছে। আমি তো ২০ টাকাও খাইনি। আর অডিওর সত্য-মিথ্যা আমি কী করে বলব। এই বিষয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে নেই, তারপর আমাদের কী করণীয় তা ঠিক করব।’
মন্তব্য করুন