রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে ‘ক্যাম্পাস বাউলিয়ানা’র গানের আসরে ফরহাদ নামে এক সাবেক শিক্ষার্থীর বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বর্তমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে সাবেক ওই শিক্ষার্থী। পরে প্রক্টর দপ্তরে ‘ভবিষ্যতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ না করা শর্তে’ মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায় তিনি।
অভিযুক্ত রুহুল কুদ্দুস মীর ফরহাদ আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি চুয়াডাঙ্গা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রক্টর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে ‘ক্যাম্পাস বাউলিয়ানা’ দলের কয়েকজন সদস্য গান করছিলেন। কিছুটা দূরে সাবেক শিক্ষার্থী ফরহাদ আলী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক খন্দকার মাহমুদুল হাসানসহ কয়েকজন একসঙ্গে বসে গল্প করছিলেন। একপর্যায়ে ফরহাদ গানের আসরে এসে গান গাইতে নিষেধ করেন এবং পূর্বের জায়গায় ফিরে যান। কিন্তু শিক্ষার্থীরা গান বন্ধ না করলে ফের এসে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করেন তিনি। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরাও উত্তেজিত হয়ে যায়। এ সময় শিক্ষক খন্দকার মাহমুদুল হাসান বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে বিষয়টি অবগত করেন। কিছুক্ষণ পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর পুরনজিত মহলদার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং সমাধানের চেষ্টা করেন। কিন্তু এর মাঝেই শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ আল হাসান লাবন সেখানে উপস্থিত হন এবং সাবেক ওই শিক্ষার্থীকে ‘শিবির’ অ্যাখ্যা দিয়ে মারতে উদ্যত হন। এতে ঘটনাস্থলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক ও জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত ফরহাদকে প্রক্টর দপ্তরে নিয়ে যান। পরে ভবিষ্যতে তিনি আর কোনো দিন ক্যাম্পাসে প্রবেশ না করবেন না শর্তে মুচলেকা দিলে ফরহাদ আলীকে ছেড়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ঘটনার ব্যাপারে ‘ক্যাম্পাস বাউলিয়ানা’ গানের দলের সদস্য কে এস কে হৃদয় বলেন, পরিবহনে থাকা অনেক মানুষ তাদের গান উপভোগ করছিল। তারা তাদের মতো গান করছিলেন। তিনি (ফারহাদ) এসে তাদের গান গাইতে নিষেধ করেন। কিন্তু তারা গান গাইতে থাকলে তিনি (ফরহাদ) তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। তিনি তাদের সংস্কৃতি চর্চায় বাধা দিতে পারেন না। তাই সেটির প্রতিবাদ করেছেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, সাবেক শিক্ষার্থী ফরহাদ তার কাজে অনুতপ্ত হয়েছেন। আমরা তার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি ভবিষ্যতে আর ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবেন না।
মন্তব্য করুন