শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের হিজাব-নিকাব খুলতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে হাফিজুর রহমান নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সোমবার (১১ মার্চ) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ অভিযোগ করা হয়।
এ ছাড়া কয়েকজনকে মেসেঞ্জারে ‘অপ্রীতিকর বার্তা’ পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আগামী দুই দিনের মধ্যে দাবি আদায় না হলে বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে তীব্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক হাফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।
‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ’-এর ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘হিজাব আমার ব্যক্তি স্বাধীনতা’, ‘ব্যক্তি স্বাধীনতায় চলবে না কোনো না হস্তক্ষেপ’, ‘বাবার মতো শিক্ষকের এ কেমন আচরণ’, ‘ক্লাসে পর্দার অধিকার হরণকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই’, ‘শিক্ষক যদি এমন হয়, তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়’, ‘নিকাব নিয়ে হয়রানি মানছি না মানব না’, ‘নিকাব নিয়ে আর নয় কোনো কটূক্তি’, ‘হিজাব, নিকাব, পর্দা আমার অহংকার-গর্ব’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্লেকার্ড প্রদর্শন করেন।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানান, ক্লাসে গরম লাগার কারণে তিনি ছোট একটি কাগজ দিয়ে নিজেকে বাতাস করছিলেন। এ সময় ওই শিক্ষক তাকে দাঁড় করিয়ে বলেন, ‘এটা কি করছ, এটা তো খুবই দৃষ্টিকটু। এ রকম প্যাকেটের মতো পোশাক পরে আসলে তো গরম লাগবেই। তোমার গরম তোমার কাছেই রাখো।’
ওই শিক্ষার্থী আরও জানান, আরেক দিন তার এক বান্ধবী ক্লাসে জোরে উপস্থিতি দিলেও তিনি (শিক্ষক) না শোনার অজুহাত দিয়ে জোরপূর্বক নিকাব খুলিয়েছেন। এ ছাড়া আরেক বান্ধবীর নিকাব নিয়ে কটূক্তি করেছেন। ওই শিক্ষক শুধু নিকাব নিয়ে নয়, সাথে পুরো ইসলামের সংস্কৃতি নিয়ে কটূক্তি করেছেন। ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বান্ধবী, বড়বোন ও ছোটবোনদের পর্দার অধিকার নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদে আজকে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। আমরা ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, আমাদের বোনদের হিজাব পরার ব্যক্তিস্বাধীনতা রয়েছে। এই হিজাব নিয়ে কটূক্তি করে ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ করা চলবে না।’
এ বিষয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহা. আশরাফ উজ জামান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমার কাছে অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল একাডেমিক কমিটির মিটিংয়ে আলোচনা করা হবে।’
মন্তব্য করুন