ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়ে প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিম সদস্য মো. জুয়েল রানার বিরুদ্ধে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার (৮ এপ্রিল) গঠিত চার সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. লিটন কুমার সাহা ও সদস্য সচিব হিসেবে ড. মো. হাসান ফারুককে রাখা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী প্রক্টর ড. এম এল পলাশ ও মুহাম্মদ মাঈনউদ্দিন মোল্লা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অতি দ্রুত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ড. মো. হাসান ফারুক বলেন, বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে। কালক্ষেপণ করার সুযোগ নেই।
এর আগে, গতকাল কালবেলায় ‘ঢাবির প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ সংবাদের প্রেক্ষিতে এদিনই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
গত ১৩ মার্চ (দ্বিতীয় রোজার দিন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে অভিযুক্ত জুয়েল হাকিম চত্বরের ফুলের দোকানি সমতাজ বেগমের কাছ থেকে চাঁদা নেন বলে ভুক্তভোগী নিজেই কালবেলাকে বিষয়টি সম্প্রতি জানান। লোকজনের আড়াল করতে চাঁদার এই এক হাজার টাকা জুয়েল গোলাপ ফুলের ভেতরে ভরে গ্রহণ করেছেন এবং অন্যান্য ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো থেকেও প্রতিনিয়ত এভাবে মাসিক চাঁদা নেন বলে জানান তিনি। এসময় তার কয়েকজন সহকর্মীও ছিলেন বলে জানান ভুক্তভোগী।
চাঁদা নেওয়ার ঘটনায় অভিযোগ করে ফুলের দোকানি সমতাজ বেগম কালবেলাকে বলেন, এখানে (হাকিম চত্বর এলাকা) দোকান বসানোর কারণে প্রক্টরিয়াল টিমের জুয়েলকে আমার ১ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়েছে। জুয়েল দ্বিতীয় রোজার দিন সন্ধ্যায় আমার কাছ থেকে এই টাকাটা নেয়, তখন তার সাথে প্রক্টরিয়াল টিমের আরও তিন-চারজন লোক ছিল। আমি তাদের নাম জানি না। আর টাকাটা যখন সে নিয়েছে তখন তা গোলাপ ফুলের ভেতরে ভরে দিতে হয়েছে। চাঁদা নেওয়ার সময় লোকজন দেখবে বলে ফুলের ভিতর ভরে দিতে বলে সে।
তিনি বলেন, আমি ক্যান্সারের রোগী। চিকিৎসার জন্য একজন আমাকে এই এক হাজার টাকা দিয়েছিলো। সেটাই জুয়েলকে দিয়ে দিতে হয়েছে। জুয়েল আমার কাছে প্রতিমাসে ১ হাজার টাকা করে চাঁদা চেয়েছে। চাঁদা দিলেই শান্ত থাকে, আর না দিলেই ঝামেলা করে, দোকানপাট ভেঙ্গে ফেলে।
সমতাজ বেগম কালবেলাকে আরও বলেন, বইমেলা যখন চলছিল তখনও এখানে ফুলের দোকান চালানোর জন্য জুয়েল আমার কাছে চাঁদা চেয়েছিল, ওই সময় আমি টাকা দিতে পারিনি। যার কারণে, আমার দোকানের সবকিছু ভেঙ্গে ১২০ পিস ফুল (প্রতি ফুলের ক্রয়মূল্য ১৫ টাকা) নিয়ে টিএসসির ডাস চত্বরের ফুলের দোকানদার পারভীন ও আলমের মায়ের কাছে বিক্রি করেছে। ডাস চত্বরের ফুলের দোকানদাররা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ক্যাম্পাসে গাঁজা ও ইয়াবা বিক্রি করে। তাদের কাছ থেকে জুয়েল গাঁজা নিয়ে খায়। আর ক্যাম্পাসে যতগুলো দোকান আছে, এগুলো থেকে জুয়েলসহ প্রক্টরিয়াল টিমের কয়েকজন চাঁদা নেয়।