শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪ আশ্বিন ১৪৩২
শিবলী আহমেদ
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:৪৭ এএম
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৩১ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ইয়োগার সমুদ্রে নিজেকে সমর্পণ করেছি : সোহানা সাবা

অভিনেত্রী সোহানা সাবা। ছবি : সংগৃহীত
অভিনেত্রী সোহানা সাবা। ছবি : সংগৃহীত

‘আমি কখনো জিমে যাইনি’—অভিনেত্রী সোহানা সাবার মুখে এ কথা শুনলে চমকে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। বড় পর্দায় এ তারকাকে বরাবরই বেশ স্লিম দেখে অভ্যস্ত দর্শকরা। তাছাড়া নায়িকাদের ‘ফিট বডি’ মানেই যে জিমে গিয়ে ঘাম ঝরানো, এ আর নতুন কী! কিন্তু সোহানা সাবা অস্বীকার করলেন সেটাকেই। ভারী যন্ত্র তুলে কসরত করা তার ধাঁচে সয় না।

ছোটবেলা থেকে নাচ শেখাই হয়তো সোহানার এ পাফেক্ট ফিটনেসের কারণ। কিন্তু তাতেও অভিনেত্রীর ‘না’! জানালেন, তার ফিটনেসের পেছনে আছে ইয়োগা। মানে যোগব্যায়াম আরকি। তবে ‘যোগব্যায়াম’ শব্দটা যতটা হালকা করে বলা হলো, সোহানার কাছে বিষয়টা কিন্তু মোটেও সামান্য নয়। এ ব্যায়ামের আসন, প্রাণায়াম ও ধ্যানের সঙ্গে তার ১৬ বছরের মিতালি! সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা সোহানার ওপর চোখ রাখেন, তারা মাঝেমধ্যেই তার এ ধরনের ব্যায়ামের ছবি দেখতে পান। অভিনয়ের পাশাপাশি এ ইয়োগাই এখন তার সব চৈতন্যজুড়ে আছে!

২০০৭ সালের কথা, কেবল যোগসাধনা শুরু করেছেন সোহানা। তখন এ বিষয়ে তার এতটা আগ্রহ ছিল না। সময়ের আবর্তে এর গভীরে গিয়ে ইয়োগাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়েছেন এ অভিনেত্রী! এমনকি ‘ইয়োগিস (yogis) নামে একটি প্রতিষ্ঠানও চালু করবেন এ মাসে। তিনিই হবেন সেটির প্রশিক্ষক। তবে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর ‘মাস্টারি’ করা তার একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। নিজের জন্যও এটি জরুরি। বললেন, ভুলভাবে যোগব্যায়াম করলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে তার নিউজ ফিডে অনেক যোগচর্চাকারীর ভিডিও আসে। কিন্তু সেখানে তিনি কিছু ভুল দেখতে পান। ইয়োগা নিয়ে ছোট-বড় নানা কোর্স করা হয়েছে সোহানার। তাই এ বিষয়ের সূক্ষ্ম ত্রুটিও তার চোখ এড়ায় না। ইয়োগায় ‘তিল-সম’ ভুলে ‘তাল-সম’ ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে—এমন সতর্কবার্তাই দিলেন মধ্যবর্তিনী সিরিয়ালে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়ে নেওয়া এ অভিনেত্রী।

নিজের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান ইয়োগিসে তালিম দেবেন সোহানা নিজেই। ইয়োগার প্রকারভেদের প্রশ্নে তিনি এ বিষয়ে তার জানাশোনার ঝাঁপি উপুড় করে দিয়ে বললেন, আমি ‘ঋষি কেশ’-এ গিয়ে উপলব্ধি করতে পারলাম ইয়োগা মূলত একটি গভীর সমুদ্র! সেখানে ডুব দিলে উঠে আসা সম্ভব নয়। আমি সেই গভীর সমুদ্রে নিজেকে সমর্পণ করলাম। এরপরই ঝেড়ে কাশলেন। বললেন, ‘ইয়োগা বলতে আমরা শুধু শারীরিক কসরতকেই চিনি ও জানি। কিন্তু এর আছে আরও তিনটি পার্ট। সেই তিনের একটি হলো শারীরিক কসরত তথা আসন। বাকি দুটি হলো—প্রাণায়াম ও ধ্যান। প্রাণায়াম হলো শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন। শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ যথাযথভাবে নিশ্চিত করার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। ধ্যানের গুরুত্বও অসীম। ১০ মিনিট ইয়োগা করলেও এই তিনের সমন্বয় বেশ জরুরি। আলাদাভাবে শুধু আসন কিংবা প্রাণায়াম অথবা ধ্যান করলে কিন্তু পারফেক্ট ব্যালান্স হবে না। এই তিনটি মিলেই ইয়োগার টোটাল একটা পার্ট। একটা ফুল সার্কেল হবে। ইয়োগা সমুদ্রে—আসন, প্রাণায়াম ও ধ্যান যেন উপসমুদ্র!’

সোহানা বলেন, ‘আমার শারীরিক গঠন দেখে অনেকে ভাবেন—আমি হয়তো জিমে গেছি। কিন্তু আমি কখনোই কোনোদিন একবারের জন্যও জিমে ঢুকিনি। ইনস্ট্রুমেন্ট নিয়ে ব্যায়াম করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। ওসব নিয়ে একবার ব্যায়াম করলে আজীবনই করে যেতে হবে বলে আমার ধারণা। এতে শরীরের ফ্ল্যাক্সিবিলিটি অনেকটা রিজিট হয়ে যায়, লিমিটেড হয়ে যায়। ব্যায়ামের ক্ষেত্রে আমি ফ্রি হ্যান্ডকেই প্রায়োরিটি দিই।’

নিজের শৈশবের স্মৃতি টেনে বললেন, ‘খুব ছোটবেলা থেকে ক্ল্যাসিকাল ডান্স শিখি। তাই আমার কাছে ফিজিক্যাল ফ্ল্যাক্সিবিলিটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি উপলব্ধি করেছি, এত বছর আমি নাচ করলেও আমার ফ্ল্যাক্সিবিলিটি লিমিটেশন ছিল। ইয়োগার মাধ্যমে ধীরে ধীরে সেই জটগুলো খুলছে।’

যোগব্যায়ামের রয়েছে ব্যাধি উপশম গুণও। সোহানার মতে, শরীরের ছোটখাটো ব্যথাসহ নানা বালাই ইয়োগার মাধ্যমে দূর করা যায়। দৈহিক ও মানসিক যেসব সমস্যা চোখের সামনে দেখা যায় না, ওসব দূর করার পন্থা হতে পারে যোগব্যায়াম।

অভিনেত্রীর মতে, ‘ইয়োগার মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন সমস্যার প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এর মাধ্যমে কিছু রোগ সারানো যায়, আবার রোগ প্রতিরোধও হয়।’ যোগব্যায়ামের মানসিক উপকারিতার ফিরিস্তিও মেলে ধরেছেন তিনি। বললেন, ‘যে কোনো ধরনের শারীরিক কসরত মনকে প্রশান্ত করে। কসরত করলে আমরা আমাদের দেহটাকে বাইরে থেকে তৃতীয় নয়নে দেখতে পারি; তখন বুঝতে পারি শরীরে কী কী সমস্যা ছিল। প্রাণায়াম ও ধ্যানের মাধ্যমে মনকে শিথিল ও শান্ত করতে পারি।’

পরিশেষে জানালেন, তার প্রতিষ্ঠিত yogis-এর ‘এস’ বর্ণটি ‘সোহানা সাবা’র প্রতিনিধিত্ব করে। এই প্রতিষ্ঠানে ইয়োগার তালিম দেওয়ার পাশাপাশি ইয়োগা করতে যা কিছু লাগে, বিশেষ করে কাপড়চোপড়, সেগুলোর একটি ব্র্যান্ড দাঁড় করাচ্ছেন তিনি।

ইয়োগা যে তার রক্তে মিশে গেছে, তা বোঝা গেল সোহানার আবেগমিশ্রিত কিছু কথামালায়। বললেন, ‘সাইকোলজিক্যাল যে ব্যাপারগুলো, তাতে আমার ভীষণ আগ্রহ। আমি সেটা বোঝার রসদ পাই ইয়োগার মাধ্যমে। একটা শক্তি পাই। আমি ইয়োগা করছি, করে যেতে চাই। আমি ইয়োগিসের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রশিক্ষক—আমার এ পরিচয়টি খুব আনন্দের সঙ্গে প্রকাশ করতে চাই।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দুই দফা দাবি / আন্দোলনস্থান ত্যাগে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের

বুয়েট শিক্ষার্থী সনি হত্যা মামলার আসামি টগর গ্রেপ্তার

শ্রীলঙ্কার জয়ে ভর করে সুপার ফোরে বাংলাদেশ

গাজায় ইসরায়েলের চার সেনা নিহত

রাজধানীর ইন্দিরা রোড থেকে এক আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

ইন্দোনেশিয়ায় আন্তঃধর্মীয় সম্মেলন / অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন ও সম্প্রীতিময় আন্তঃধর্মীয় সংলাপে গুরুত্ব

পেনশন নিয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বড় সুখবর

অস্ত্র মামলায় যুবকের ১০ বছরের কারাদণ্ড

চাকসুতে ১০ পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা

চট্টগ্রামকে ক্লিন সিটি করতে নতুন ল্যান্ডফিল্ড কেনার উদ্যোগ চসিকের

১০

রাত নামলেই লুট হচ্ছে কীর্তনখোলা নদীর বেড়িবাঁধের ব্লক

১১

পূজা উদযাপন পরিষদ নেতা গিরীধারী লালের পরলোকগমন

১২

‘বাংলাদেশ-চীন হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাবে’

১৩

পাল্টে গেল সমীকরণ, এখন যেভাবে সুপার ফোরে যেতে পারে বাংলাদেশ

১৪

নির্বাচনী দায়িত্বে অবহেলা ও অপরাধের সাজা বাড়ছে

১৫

ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতালের অনন্য অর্জন

১৬

বিসিএস পরীক্ষা / সেনানিবাস এলাকায় প্রবেশে বিশেষ নির্দেশনা

১৭

বিএনপি নেতার বাড়িতে গুলি, কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ

১৮

কক্সবাজারে ৩১৭ মণ্ডপে হবে দুর্গাপূজা, চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

১৯

জুলাই ঘোষণার আইনি ভিত্তি দিয়েই আগামী নির্বাচন হতে হবে : গোলাম পরওয়ার 

২০
X