বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৫২ পিএম
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:০৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এ বছর মারা গেলেন যে তারকারা

এ বছর মারা যাওয়া তারকাদের কয়েকজন। ছবি : সংগৃহীত
এ বছর মারা যাওয়া তারকাদের কয়েকজন। ছবি : সংগৃহীত

ক্যালেন্ডার থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে আরও একটি বছর। বছর শেষে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির খেড়োখাতা মেলাতে বসেছেন অনেকেই। ২০২৩ সালের শেষ লগ্ন উপস্থিত। এ বছর মারা গেছেন শোবিজের বেশ কজন তারকা।

নায়ক ফারুক

ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি চিত্রনায়ক ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ বছর ১৫ মে মারা যান। ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। তার বাবা আজগার হোসেন পাঠান। এ নায়কের শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে পুরান ঢাকায়। পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট। তিনি স্কুল জীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনে যোগ দেন এবং এ সময়ে তার নামে প্রায় ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়। এরপর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক। ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’ দুটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। এরপর ১৯৭৫ সালে গ্রামীণ পটভূমিতে নির্মিত ‘সুজন সখী’ ও ‘লাঠিয়াল’ দুটি ব্যবসাসফল ও আলোচিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং সে বছর ‘লাঠিয়াল’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৭৬ সালে মুক্তি পায় তার অভিনীত ৩টি সিনেমা সূর্যগ্রহণ, মাটির মায়া ও নয়নমণি। আর এই চলচ্চিত্র ৩টি বিভিন্ন বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। পরের বছর শহীদুল্লাহ কায়সার রচিত কালজয়ী উপন্যাস ‘সারেং বৌ’ অবলম্বনে নির্মিত ‘সারেং বৌ’ ও আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

এ চলচ্চিত্র দুটি নারীকেন্দ্রিক হলেও তার অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে। ১৯৭৯ সালে তার অভিনীত নাগরদোলা, দিন যায় কথা থাকে, কথা দিলাম, মাটির পুতুল, সাহেব, ছোট মা, এতিম, ঘরজামাই চলচ্চিত্রগুলো ব্যবসাসফল হয়।

১৯৮০ সালে ‘সখী তুমি কার’ ছায়াছবিতে শাবানার বিপরীতে শহুরে ধনী যুবকের চরিত্রে অভিনয় করে সমালোচকদের প্রশংসা লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে মিয়া ভাই চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে মিয়া ভাই হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

নায়ক ফারুক ‘সুজন সখী’, ‘নয়নমণি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সাহেব’, ‘আলোর মিছিল’, ‘দিন যায় কথা থাকে’সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত বেশির ভাগ চলচ্চিত্রই ব্যবসা সফল হয়। চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৬ তাকে আজীবন সন্মাননা দেওয়া হয়।

হুমায়রা হিমু

ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর ২ নভেম্বর মারা যান। ১৯৮৫ সালের ২৩ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলায় হুমায়রা হিমুর জন্ম। তিনি ইস্পাহানি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। মঞ্চনাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি প্রথম নাট্য জগতে প্রবেশ করেন। ফ্রেঞ্চ নামক নাট্য দলের হয়ে তিনি অভিনয় করেন।

২০১১ সালে ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে হুমায়রা হিমুর অভিষেক হয়। চলচ্চিত্রের গল্পটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং চলচ্চিত্রে তার অসাধারণ অভিনয় সমালোচকদের ইতিবাচক সাড়া পেয়েছিল।

নির্মাতা তারেক মাহমুদ

অভিনেতা, নির্মাতা ও কবি তারেক মাহমুদ ২৬ অক্টোবর রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তারেক মাহমুদের ছায়ালোক মিডিয়া স্টেশন নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর ব্যানারে ‘চটপটি’ শিরোনামে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে হাত দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে তা থেমে ছিল বলে জানা যায়। কাজটি অসমাপ্ত রেখেই পরপারে পাড়ি জমান তিনি। এ ছাড়াও তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কালার বাঁশি’ প্রকাশ হয় ১৯৯৭ সালে।

জিনাত বরকতুল্লাহ

একুশে পদকপ্রাপ্ত জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী জিনাত বরকতুল্লাহ ২০ সেপ্টেম্বর বিকেলে ধানমন্ডির নিজবাসায় মারা যান। তিনি চার বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী গাজী আলিমুদ্দিন মান্নানের কাছে নৃত্য শেখা শুরু করেন। এ ছাড়াও বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নৃত্য শিক্ষা লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে জিনাত বরকতুল্লাহ যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পারফর্মিং আর্টস একাডেমিতে। পরে তিনি শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত প্রোডাকশন বিভাগের পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। সেখানে তিনি ২৭ বছর কর্মরত ছিলেন।

১৯৮০ সালে জিনাত বরকতুল্লাহ বিটিভির নাটক ‘মারিয়া আমার মারিয়া’ দিয়ে অভিনয়জীবন শুরু করেন। এরপর ‘ঘরে বাইরে’, ‘অস্থায়ী নিবাস’, ‘বড় বাড়ি’, ‘কথা বলা ময়না’সহ বেশ কয়েকটি টিভি নাটকে অভিনয় করেন তিনি। জিনাত বরকতুল্লাহ নৃত্যশিল্পে অবদানের জন্য ২০২২ সালে একুশে পদক পেয়েছেন। ২০২০ সালের ৩ আগস্ট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জিনাত বরকতুল্লাহর স্বামী টিভি ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ।

খালেকুজ্জামান

মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা খালেকুজ্জামান ২১ মার্চ সকালে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন। দেশ স্বাধীনের পর যুক্ত হন অভিনয়ে। তার অভিনীত প্রথম নাটক ‘সর্পভ্রমে রজ্জু’ বিটিভিতে প্রচার হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে তিনি বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হন। কাজ করেছেন বহুল জনপ্রিয় নাটক ‘বড় ছেলে’সহ এই সময়ের বহু নাটকে। এ ছাড়া মুরাদ পারভেজের ‘বৃহন্নলা’, শিহাব শাহীনের ‘ছুঁয়ে দিলে মন’, অনম বিশ্বাসের ‘দেবী’ সিনেমায়ও দেখা গেছে এই অভিনেতাকে।

মিতা চৌধুরী

প্রথিতযশা অভিনেত্রী মিতা চৌধুরী ২৯ জুন যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। স্বামী-সন্তানের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে বসবাস করতেন। তিনি ক্যানসার আক্রান্ত ছিলেন।

সত্তর-আশির দশকের জনপ্রিয় এই নাট্যশিল্পী দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। ২০০৬ সালে দেশে ফিরে আবার নাটকে অভিনয় শুরু করেন। এটি তার দ্বিতীয় অধ্যায়। এরপর আবার নিয়মিত অভিনয় করেছেন। তার প্রথম ধারাবাহিকের নাম ‘শান্ত কুটির’। শুধু টিভি নাটকই নয়, মঞ্চে ‘সূচনা’ ও ‘গুড নাইট মা’-এর মতো প্রযোজনায় নিজেকে জড়িয়েছেন তিনি।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নাট্যকার মারশা নরম্যানের ‘নাইট মাদার’ অবলম্বনে ‘গুড নাইট মা’ এর পাণ্ডুলিপি তৈরি করেন মিতা চৌধুরী। নাটক ছাড়াও একাধিক সিনেমাতে কাজ করেছেন গুণী এই অভিনেত্রী। মিতা চৌধুরী অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হচ্ছে–বিষ, আন্ডার কনস্ট্রাকশন ও মেড ইন বাংলাদেশ।

রাজীব আশরাফ

জনপ্রিয় কবি, গীতিকার ও নির্মাতা রাজীব আশরাফ সেপ্টেম্বর সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দেশের জনপ্রিয় গায়ক অর্ণবের ‘হোক কলরব’, ‘নাম ছিল না’, ‘প্রকৃত জল’, ‘ঘুম’, ‘ধূসর মেঘ’সহ অনেক গানের গীতিকার তিনি। এ ছাড়া এয়ারটেল প্রযোজিত প্রায় সব টেলিছবিতে গান লিখেছেন তিনি।

তার লেখা উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গান হলো- ‘জলকণা উড়ে যায়’ (ভালোবাসি তাই), ‘ভালোবাসি তাই ভালোবেসে যাই’, ‘এই আমার শহর’ (অ্যাট-এইটিন অলটাইম দৌড়ের ওপর), ‘যাযাবর পাখনা’ (মাংকি বিজনেস), ‘এই যাত্রার শেষ কোথায় অজানা’ (ইউ-টার্ন) প্রভৃতি।

চলচ্চিত্রেও গান লিখছেন রাজীব আশরাফ। রেদওয়ান রনির ‘আইসক্রিম’ সিনেমায় অর্ণবের গাওয়া ‘বোকা চাঁদ’ রাজীবের লেখা। গান লেখার পাশাপাশি বিজ্ঞাপনও বানিয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশ গেমসের জন্য তথ্যচিত্র বানিয়েছিলেন এই নির্মাতা। শুধু লেখা বা নির্মাণই নয়, রাজীব আশরাফ অভিনয়ও করেছেন নাটক-টেলিছবিতে।

আশেক মাহমুদ

গীতিকার সৈয়দ আশেক মাহমুদ ২১ জানুয়ারি তিনি মারা যান। ‘আমি সবকিছু ছাড়তে পারি তোমাকে ছাড়তে পারব না’ গানটির গীতিকার তিনি। রবি চৌধুরীর গাওয়া ‘পৃথিবীকে চিনি আর তোমাকে চিনি’, শুভ্র দেবের গাওয়া ‘ও বেহুলা বাঁচাও’, কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া ‘মুক্তিযুদ্ধ করেছি আমরা দূরন্ত’ গানগুলোর গীতিকার আশেক মাহমুদ।

এ ছাড়া রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমীনসহ দেশের আরও অনেক গুণী ও জনপ্রিয় শিল্পীর জন্য গান লিখেছিলেন তিনি।

নাদিরা বেগম

পল্লীগীতি ও লোকগীতির স্বনামধন্য কণ্ঠশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা নাদিরা বেগম ৬ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ১৯৬০ সালে রেডিওতে সংগীতশিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন নাদিরা বেগম। এরপর নিয়মিত ভাওয়াইয়া, পল্লীগীতি ও লোকগীতি গান করতে দেখা গেছে।

নাদিরা বেগম ছিলেন ‘কল কল ছল ছল নদী করে টলমল...’ ছাড়াও একাধিক বিখ্যাত গানের গীতিকার ও সুরকার এ কে এম আবদুল আজিজের মেয়ে। এ ছাড়া তিনি দীর্ঘদিন ভাওয়াইয়া একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

শফি বিক্রমপুরী

চলচ্চিত্রকার শফি বিক্রমপুরী ব্যাংককের একটি হাসপাতালে ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার প্রথম পরিচালিত সিনেমা ‘রাজদুলারি’। এরপর ‘আলাদিন আলিবাবা সিন্দাবাদ’, ‘দেনমোহর’সহ কয়েকটি ছবি পরিচালনা করেছেন। তার প্রযোজিত ও পরিবেশিত সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, ‘ডাকু মনসুর’, ‘বাহাদুর’, ‘বন্দুক’, ‘সবুজ সাথী’।

বুলবুল মহলানবীশ

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ও প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী বুলবুল মহলানবীশ ৭০ বছর বয়সে ১৪ জুলাই ইন্তেকাল করেন।

তিনি একাধারে কবি ও লেখক সঙ্গীত, নাট্য ও আবৃত্তিশিল্পী হিসেবেও খ্যাতি লাভ করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন-বেতার-মঞ্চে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিবিষয়ক বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান তিনি উপস্থাপনা করতেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক হিসেবে কাজ করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে সেই সময়কার রেসকোর্স ময়দানে যখন পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করছিল, ওই সময় কলকাতার বালিগঞ্জের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয় ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ’- গানটি। কালজয়ী এই গানের শিল্পীদের একজন বুলবুল মহলানবীশ।

বুলবুল মহলানবীশের জন্ম ১৯৫৩ সালের ১০ মার্চ বিক্রমপুরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি। পেশাগত জীবনে দীর্ঘদিন শিক্ষকতাও করেছেন তিনি।

সোহানুর রহমান সোহান

চলতি বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর মারা গেলেন পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান। নিজ বাসায় ঘুমের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ খ্যাত পরিচালকের। সোহানুর রহমান সোহান দীর্ঘদিন ধরে নিউরো সমস্যায় ভুগছিলেন।

সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত আলোচিত সিনেমাগুলো হলো—‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘আমার দেশ আমার প্রেম’, ‘স্বজন’, ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’, ‘অনন্ত ভালোবাসা’, ‘স্বামী ছিনতাই’, ‘আমার জান আমার প্রাণ’, ‘পরাণ যায় জ্বলিয়া রে’, ‘কোটি টাকার প্রেম’, ‘সে আমার মন কেড়েছে’, ‘দ্য স্পিড’ ও ‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’ ইত্যাদি।

চলচ্চিত্রের নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘বিশ্বাস অবিশ্বাস’। এ নির্মাতার হাত ধরেই চলচ্চিত্রে আসেন সালমান শাহ, মৌসুমী, পপি ও ইরিন জামান। শাকিব খান অভিনীত প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অনন্ত ভালোবাসা’ সিনেমার পরিচালকও ছিলেন তিনি।

সালাউদ্দিন জাকী

খ্যাতিমান নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী ১৯ সেপ্টেম্বর ৭৭ বছর বয়সে মারা যান। ‘ঘুড্ডি’ সিনেমা পরিচালনা করে আলোচিত তিনি। ১৯৪৬ সালের ২৬ আগস্ট তিনি জন্মগ্রহণ করেন এই নির্মাতা। ১৯৮০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ঘুড্ডি’ সিনেমা দিয়ে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন।

এই সিনেমার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ২০২১ সালে একুশে পদক লাভ করেন তিনি। ‘লাল বেনারসি’, ‘আয়না বিবির পালা’সহ কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন তিনি।

মোহন খান

পরিচালক, নাট্যকার মোহন খান মারা যান ৩০ মে। তার পরিচালিত প্রথম নাটক ‘আমার দুধ মা’ বিটিভিতে প্রচারিত হয়। তার লেখা ও পরিচালনায় নাটক ‘সমুদ্রে গাঙচিল’, ‘সেই আমরা’, ‘নীড়ের খোঁজে গাঙচিল’, ‘জেগে উঠো সমুদ্র’, ‘মেঘবালিকা’, ‘দূরের মানুষ’, ‘আঙ্গুর লতা’, ‘হৃদয়পুরের গল্প’ ইত্যাদি।

মোহাম্মদ নোমান

নাট্য নির্মাতা মোহাম্মদ নোমান মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মারণব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন এই নির্মাতা।

নির্মাতার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন টেলিভিশন নাটক নির্মাতাদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান সাগর। তিনি বলেন, ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশের সদস্য নাট্য নির্মাতা মোহাম্মদ নোমান ইন্তেকাল করেছেন। ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন নির্মাতা নোমান। অবস্থা সংকটাপন্ন হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছিল তাকে। এর আগে, পরিবার, নিকটাত্মীয় ও বিভিন্ন সংগঠনের সহযোগিতায় চলছিল নোমানের চিকিৎসার ব্যয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্লোগান, মিছিলে নগরভবনের সামনে ইশরাকের অনুসারীরা

যৌতুক নিয়ে হট্টগোল, বিয়ের আসর থেকে বর আটক

বায়ুদূষণের শীর্ষে লাহোর, ঢাকার অবস্থান কত

আজ সরকারি অফিস-ব্যাংক খোলা 

মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ ও হত্যায় হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড

রাঙামাটিতে ভাঙা হচ্ছে শেখ মুজিবের ভাস্কর্য

গোপালগঞ্জে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা শামচুল গ্রেপ্তার

ইউনিয়ন ব্যাংকে চাকরির সুযোগ

চাঁদপুরে চুরি হওয়া পুলিশের অস্ত্র-গুলি ঢাকায় উদ্ধার

দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি কাশ্মীরের সমাধান ছাড়া সম্ভব নয় : আসিম ইফতিখার

১০

আমরা ৯০ হাজার জীবন হারিয়েছি, ক্ষতি ১৫০ বিলিয়ন ডলার : শেহবাজ

১১

১৭ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১২

আমাদের মিডিয়া ভারতকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে : সেনাপ্রধান

১৩

মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় আজ

১৪

দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় ঝড়ের শঙ্কা

১৫

বাংলাদেশের ম্যাচসহ টিভিতে আজকের খেলা

১৬

শনিবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৭

১৭ মে : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৮

বাঞ্ছারামপুরে আম পাড়া নিয়ে সংঘর্ষ, টেঁটাবিদ্ধসহ আহত ৮

১৯

চকরিয়ায় অটোরিকশা-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

২০
X