

২৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও প্রাণনাশের হুমকির মামলায় দিনভর নাটকীয়তার পর অবশেষে জামিন পেলেন মডেল ও অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী এবং তার ভাই আলিসান চৌধুরী।
রোববার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক আফরোজা হক তানিয়ার আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তারা। আদালত শুনানি শেষে তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মেহজাবীনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তুহিন হাওলাদার জানান, আগামী ১৮ ডিসেম্বর মামলাটিতে মেহজাবীনের জবাব দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মেহজাবীনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তুহিন হাওলাদার বলেন, ‘বাদীর সাথে মেহজাবীনের কোনো পরিচয় নেই। সম্পূর্ণ হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলাটি করা হয়েছে। অভিযোগের কোনো প্রমাণও (বাদীপক্ষ) দেখাতে পারেনি।’
এদিকে, এই মামলার বাদী আমিরুল ইসলামকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে নতুন রহস্য। সকালে যিনি সংবাদ মাধ্যমে মেহজাবীনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির খবরটি নিশ্চিত করেছিলেন, রোববার বিকেল থেকেই তিনি ‘লাপাত্তা’ বলে জানা গেছে। গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে, মামলার নথিতে দেওয়া বাদীর আইনজীবীর ফোন নম্বরটিও ‘সাসপেন্ডেড’ (স্থগিত) পাওয়া যাচ্ছে।
রোববার সকালেই খবর আসে, ব্যবসায় অংশীদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২৭ লাখ টাকা ‘আত্মসাৎ করা ও হত্যার হুমকি দেয়ার’ অভিযোগে মেহজাবীন ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে গত ১০ নভেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। নির্ধারিত তারিখে তারা আদালতে হাজির না হওয়ায় এই পরোয়ানা জারি করা হয়।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রোববার বিকেলেই মেহজাবীন চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক দীর্ঘ পোস্টে এই মামলাকে ‘মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেন।
মেহজাবীন পোস্টে বলেন, ‘আমি মেহজাবীন চৌধুরী। আজ একটি ভুয়া ও মিথ্যা মামলার সংবাদ দেখে আমি বিস্মিত। আমি মনে করি, বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব ছাড়া কিছু নয়। এই ধরনের কোনো ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আমি সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত নই। যে বা যারা এমন ভিত্তিহীন মামলা করেছেন, তাদের কাউকে আমি চিনি না।’
আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমার আইনজীবী যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন, যাতে এসব গুজব ও মিথ্যা প্রচারণা বন্ধ হয় এবং ভবিষ্যতে কেউ আর এই ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিছু করতে না পারে!’
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদী আমিরুল ইসলামের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয়ের সুবাদে মেহজাবীন তার নতুন পারিবারিক ব্যবসায় পার্টনার করার প্রলোভন দেখিয়ে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে মোট সাতাশ লাখ টাকা নেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু না করায় বাদী টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাকে কালক্ষেপণ করতে থাকেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বাদী পাওনা টাকা চাইতে গেলে তাকে ১৬ মার্চ হাতিরঝিলের একটি রেস্টুরেন্টে আসতে বলা হয়। ওইদিন ঘটনাস্থলে গেলে মেহজাবীন, তার ভাই ও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং ‘বাসার সামনে পুনরায় দেখলে জানে মেরে ফেলব’ বলে হুমকি দেন।
মন্তব্য করুন