

ভালো ঘুম শরীর ও মনের জন্য কতটা দরকারি, তা আমরা সবাই জানি। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, মন খারাপ, এমনকি ত্বকেও ক্লান্তভাব চলে আসে। কিন্তু জানেন কী, ঘুম বেশি হলেও শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম ঘুম যেমন ক্ষতিকর, তেমনি অতিরিক্ত ঘুমও শরীরের জন্য সমান ক্ষতিকর হতে পারে।
প্রতিদিন গড়ে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমই স্বাভাবিক। কিন্তু কেউ যদি প্রতিদিন ৯-১০ ঘণ্টা বা তারও বেশি ঘুমান, সেটিকে অতিরিক্ত ঘুম বলা হয়। এর পেছনে থাকতে পারে নানা কারণ-
- থাইরয়েডের সমস্যা
- হৃদরোগ বা স্লিপ অ্যাপনিয়া
- ডিপ্রেশন বা মানসিক চাপ
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- দীর্ঘদিনের ক্লান্তি বা অনিয়মিত জীবনযাপন
কখনো কখনো শরীর ঠিক থাকলেও জীবনযাত্রায় শৃঙ্খলা না থাকলে বা রাতে দেরি করে ঘুমালে দিনের বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে পড়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে।
অতিরিক্ত ঘুম শরীরের স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট করে দেয়। এর ফলে দেখা দিতে পারে নানা শারীরিক ও মানসিক জটিলতা:
- ওজন বেড়ে যাওয়া
- ঘন ঘন মাথাব্যথা
- পিঠে বা ঘাড়ে ব্যথা
- ডিপ্রেশন বা মন খারাপ লাগা
- ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি
অর্থাৎ, বেশি ঘুম মানেই বেশি বিশ্রাম- এই ধারণা একেবারেই ভুল।
যদি চিকিৎসাসংক্রান্ত কোনো কারণ না থাকে, তাহলে কিছু অভ্যাস বদলালেই ঘুমের ভারসাম্য ফিরে আসতে পারে—
নিয়মিত ঘুমের রুটিন তৈরি করুন : প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং একই সময়ে ঘুম থেকে উঠুন। এমনকি সপ্তাহান্তেও এই অভ্যাস বজায় রাখুন। এতে শরীর নিজের ছন্দে ঘুমাতে অভ্যস্ত হয়ে যাবে।
ঘুমের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন : ঘর অন্ধকার, শান্ত ও ঠান্ডা রাখুন। বিছানা ও বালিশ যেন আরামদায়ক হয়। ঘুমানোর আগে মোবাইল বা টিভি ব্যবহার না করাই ভালো।
দিনে ঘুমানো কমিয়ে দিন : দুপুরে খাবার পর ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে তা ধীরে ধীরে কমানোর চেষ্টা করুন। তার বদলে হালকা হাঁটা, বই পড়া বা অন্যকোনো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।
স্লিপ ডায়েরি রাখুন : প্রতিদিন কখন ঘুমাতে যাচ্ছেন, কত ঘণ্টা ঘুমাচ্ছেন, ঘুম ভেঙে গেলে কী করেন— এসব নোট করে রাখুন। প্রয়োজনে সেই তথ্য নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
অতিরিক্ত ঘুম কখনো শরীরের অলসতার ফল, কখনো আবার কোনো রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। তাই নিয়মিত ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলা, শরীরচর্চা করা এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকা— এই ৩টিই সুস্থ ঘুমের মূল চাবিকাঠি। মনে রাখবেন, ‘যতটা দরকার ততটাই ঘুম’— সেটাই আসল ভারসাম্য।
সূত্র : ফেমিনা
মন্তব্য করুন