গরমে এক বাটি ঠান্ডা দই যেন স্বস্তির আরেক নাম! খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। কিন্তু প্রতিদিন যে দই খাচ্ছেন তা আদৌ আপনার শরীরের জন্য ভালো? মিষ্টি দই না টক দই—কোনটা উপকারী আর কোনটা স্বাস্থ্যহানির কারণ হতে পারে?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, দই যতটা উপকারী মনে হয়, ঠিক ততটাই ক্ষতিকরও হতে পারে যদি আপনি ভুলভাবে তা খান। কলকাতার বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. রুদ্রজিৎ পাল দই খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও প্রভাব নিয়ে জানিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
চলুন জেনে নিই, কোন দই খেলে মিলবে উপকার আর কোনটা হলে হতে পারে বিপদ!
মিষ্টি দই: স্বাদে মজাদার, কিন্তু সাবধান!
ডা. পাল বলেন, ‘দই অত্যন্ত উপকারী হলেও প্রতিদিন মিষ্টি দই খেলে সেটা উপকারের বদলে ক্ষতিও করতে পারে।’
- মিষ্টি দইয়ে সাধারণত অতিরিক্ত চিনি ও বনস্পতি (উদ্ভিজ্জ ঘি যা স্যাচুরেটেড ফ্যাট হিসেবেও পরিচিত) মেশানো হয়।
- চিনি বেশি খাওয়ার ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে।
- বনস্পতি বা উদ্ভিজ্জ ঘি-তে থাকে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা হার্টের জন্য ক্ষতিকর।
- তাই নিয়মিত মিষ্টি দই খাওয়ার অভ্যাস এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
টক দই: স্বাস্থ্যরক্ষায় সহায়ক
ডা. পাল টক দইকে স্বাস্থ্যকর বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন এটি প্রতিদিন খাওয়া যেতে পারে।
- প্রোটিনসমৃদ্ধ এই খাবার পেশিকে শক্তিশালী করে।
- এতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে।
- টক দইয়ে থাকা ল্যাকটোব্যাসিলাস অন্ত্রকে সুস্থ রাখে, ফলে গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা কমে।
- হজম শক্তি বাড়াতেও টক দই দারুণ কার্যকর।
টক দই খাওয়ার উপযুক্ত পরিমাণ ও সময়
প্রতিদিন ১০০-১৫০ গ্রাম টক দই খাওয়া যেতে পারে। খাবার খাওয়ার ১০-১৫ মিনিট পরে দই খাওয়া সবচেয়ে উপকারী। তবে যাদের ডায়াবেটিস বা কোলস্টেরলের সমস্যা রয়েছে, তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দই খাওয়ার পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত।
উল্লেখ্য, মিষ্টি দইয়ে অতিরিক্ত চিনি ও ফ্যাট থাকায় নিয়মিত খাওয়া ক্ষতিকর। অন্যদিকে টক দই হজম, পেশি, হাড় এবং অন্ত্রের জন্য উপকারী। প্রতিদিন সীমিত পরিমাণে টক দই খেলে তা হতে পারে আপনার স্বাস্থ্যরক্ষার সঙ্গী।
মনে রাখবেন, দই খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটাকে আরও স্বাস্থ্যকর করতে টক দই বেছে নিন। এতে স্বাদে আপস হলেও স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে।
মন্তব্য করুন