ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রণে থাকলে সাধারণত পাঁচটা জটিলতা হয়। যেমন চোখের ছানি, কিডনির সমস্যা, নার্ভের সমস্যা—যার ফলে পায়ে পচনশীলতা দেখা দেয় এবং হৃদরোগ হয়।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন আরেকটি জটিলতার কথা বলছে, যেটা হলো মাড়ির রোগ। এই মাড়ির রোগ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ না থাকলে বেশি হয়। অনেক সময় দেখা যায় যাদের মাড়ির রোগ আছে, প্রদাহ হয় তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে না। ডায়াবেটিস রোগীরা ইনসুলিন নিচ্ছেন, ট্যাবলেট নিচ্ছেন, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন, ব্যায়াম করছেন, তারপরেও নিয়ন্ত্রণে নেই, তাহলে মূল রহস্যটা কী? মুখের মধ্যে যে প্রদাহ হয়, ইনফেকশন থাকে সেগুলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করে এবং গবেষণায় দেখা গেছে, যখন মাড়ির রোগের চিকিৎসা করা হয় বা মাড়িকে সুস্থ রাখা যায় তখন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
রোগ ও লক্ষণ
মাড়ির যে রোগটি হয় সেটার নাম জিঞ্জিভাইটিস। এর ফলে- • সামান্য আঘাতেই মাড়ি থেকে রক্ত পড়ে • ব্রাশ করলে ও শক্ত খাবার খেলে রক্ত পড়ে • দাঁত নড়ে যায়, মুখে দুর্গন্ধ হয়, পুঁজ বের হয় • আরেকটা হচ্ছে পিরিয়ডোনটাইটিস যেটা মাড়িতে প্রদাহের কারণ। এতে হার্ট পর্যন্ত আক্রান্ত হতে পারে। যদি এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার পরেও চিকিৎসা না করে তাহলে জটিলতা বৃদ্ধি পাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করবে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পরামর্শ আপনারা ব্যায়াম করবেন, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করবেন, ওষুধ নেবেন এবং সেই সঙ্গে মুখের যত্নটাও করবেন। • প্রতিবছর দুবার ডেন্টিস্টের কাছে যাবেন, সরকারি হাসপাতালের যে ডেন্টিস্ট বিভাগ আছে সেখানে যেতে পারেন। • মুখ ও দাঁতের পরীক্ষা করাবেন। • যদি প্রদাহ থাকে মাড়ির রোগ থাকে তাহলে সেটার চিকিৎসা করিয়ে নিবেন। তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে আপনার সুবিধা হবে। নতুবা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে না জটিলতা বৃদ্ধি পাবে। আরেকটি কথা, তামাক পাতা, জর্দা, গুল, মোহিনি ও ধূমপান এগুলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করে। যারা নিয়মিত তামাক পাতা, জর্দা, গুল, মোহিনি ও ধূমপান করেন তাদের কিন্তু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে না বরং আরও বেশি জটিলতা সৃষ্টি করে। ফলে হৃদরোগসহ অন্যান্য জটিলতা ১০০ গুণে বেড়ে যায়।
(ডা. অরুপ রতন চৌধুরী, দন্ত রোগ বিশেষজ্ঞ, বারডেম)
মন্তব্য করুন