চোখের চারপাশের কোষগুলো যখন অস্বাভাবিক হারে বাড়তে শুরু করে এবং একটি টিউমার তৈরি করে, তখনই চোখের ক্যানসার হয়। এই টিউমার কখনো ছোট, আবার কখনো মারাত্মক হতে পারে। এই ধরনের উপদ্রব দ্রুত শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে সময়মতো শনাক্ত হলে চোখের ক্যানসারের চিকিৎসা কার্যকর হয় এবং দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চোখের ক্যানসার অনেক সময় প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে না। কিন্তু নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করালে অনেক সময় লক্ষণ দেখা দেওয়ার আগেই সমস্যা শনাক্ত করা যায়। ফলে চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা সম্ভব হয় এবং সুস্থতার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
চোখের ক্যানসারের সাধারণ লক্ষণ
চোখের ক্যানসার বিভিন্ন উপসর্গে ধরা দিতে পারে। যেমন— হঠাৎ ঝাপসা দেখা, পাশের দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, বিকৃত দেখা বা একেবারে দৃষ্টিশক্তি হারানো। অনেক সময় চোখের সামনে ‘ফ্লোটার’ বা আলো ঝলকানির মতো অনুভূতি হতে পারে।
এ ছাড়া চোখের রঙ বা পিউপিলের আকারে পরিবর্তন, চোখ ফুলে যাওয়া, লালভাব বা দীর্ঘস্থায়ী চুলকানিও হতে পারে চোখের ক্যানসারের লক্ষণ। কিছু ক্ষেত্রে চোখ বা পলকের নিচে গাঁট বা গুটি দেখা যায়। চোখ নাড়াতে সমস্যা হলে তাও গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।
কারা বেশি ঝুঁকিতে?
চোখের ক্যানসার যে কোনো বয়সেই হতে পারে। তবে ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি। আবার ৫ বছরের নিচে শিশুদের মধ্যে ‘রেটিনোব্লাস্টোমা’ নামে একটি চোখের ক্যানসার দেখা যায়।
যাদের ত্বক হালকা এবং চোখ নীল বা সবুজ, তাদের এই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। গাঢ় ত্বক ও বাদামী চোখের মানুষ কিছুটা নিরাপদ। বংশগতভাবে কিছু জিনগত সমস্যা যেমন BAP1 টিউমার সিনড্রোম থাকলে ঝুঁকি বাড়ে।
চিকিৎসকদের দাবি, সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির অতিরিক্ত সংস্পর্শও চোখের ভিতরের মেলানোমা জাতীয় ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়াতে পারে।
সচেতনতাই মূল অস্ত্র
বিজ্ঞানীরা বলছেন, চোখের ক্যানসার প্রতিরোধ একটি জটিল বিষয়, তবে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা, ঝুঁকির কারণ সম্পর্কে সচেতনতা এবং প্রাথমিক লক্ষণগুলো বুঝে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া— এই সবকিছুই চোখ ও দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাই সামান্য অস্বস্তি হলেও অবহেলা না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সূত্র : ডেইলি মেইল ও দ্য ওয়াল
মন্তব্য করুন