আজকাল সুস্থ থাকার পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণ করাটাই অনেকের বড় চিন্তার বিষয়। বিশেষ করে যারা ফিটনেস নিয়ে সচেতন, তাদের প্রায় সবার মনেই প্রশ্ন— কীভাবে এমন খাবার খাওয়া যায়, যেটা খেলে পেটও ভরবে আবার ওজনও বাড়বে না। কারণ ডায়েট মানেই খাওয়া বন্ধ নয়, বরং স্মার্টভাবে খাবার বেছে নেওয়া।
এ কারণেই বিশেষজ্ঞরা সবসময় বলেন, পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে, বেশি করে ফল ও শাকসবজি খেতে হবে, আর তার সঙ্গে শরীরচর্চা করতে হবে। তবে ওজন কমানোর জন্য কেবল কম খাওয়া নয়, বরং কম ক্যালরিযুক্ত কিন্তু পুষ্টিকর খাবার বেছে নেওয়াই সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
সম্প্রতি ইনস্টাগ্রাম পেজ ‘ফিট মম ক্লাব’ এমনই ২০টি খাবারের তালিকা প্রকাশ করেছে, যেগুলো খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকবে, কিন্তু বাড়তি ক্যালরি জমে ওজন বাড়াবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলো শুধু ওজন কমাতেই সাহায্য করবে না, বরং দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যকর জীবনধারার অংশ হিসেবেও কাজ করবে।
যে ২০ খাবারের ক্যালরি প্রায় শূন্য
ফিট মম ক্লাবের তথ্যে বলা হয়েছে, খুব বেশি ক্যালরি না যোগ করেই সকালের নাশতা, দুপুর ও রাতের খাবার খাওয়া সম্ভব। তাদের মতে, যদিও পুরোপুরি শূন্য ক্যালরির খাবার নেই, তবে অনেক খাবার আছে যেগুলোতে ক্যালরি এত কম যে, এগুলো খাওয়ার ফলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা নেই। বরং এগুলো শরীরের হজমশক্তি ভালো রাখে এবং অনেক ক্ষেত্রে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ (PCOD)-এর মতো সমস্যার ঝুঁকিও কমাতে পারে।
শাকসবজি
শসা
বোতল করলা
গোল করলা
করলা
মেথি পাতা
পালংশাক
বাঁধাকপি
ব্রকলি
জুচিনি
গাজর
ফল
পেঁপে
পেয়ারা
আপেল
নাশপাতি
স্ট্রবেরি ও ব্লুবেরি
মসলা ও শাকপাতা
কারি পাতা
ধনে পাতা
আদা
রসুন
হলুদ
ফিট মম ক্লাবের দাবি, এসব খাবারে ফাইবার ও পানি বেশি থাকে, ফলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা অনুভূত হয়। পাশাপাশি হজমে সহায়তা করে, প্রদাহ কমায় এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
চিকিৎসকের পরামর্শ
ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসক ডা. রাকেশ গুপ্ত বলেন, কম ক্যালরিযুক্ত খাবার কেবল ওজন কমায় না, বরং স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সাহায্য করে। যেমন—
পালংশাক : পুষ্টিতে ভরপুর, সালাদ বা স্মুদিতে ব্যবহার করা যায়।
জুচিনি ও ফুলকপি : নুডলস বা ভাতের বিকল্প হিসেবে খাওয়া যায়।
তবে তিনি সতর্ক করেছেন, শুধু কম ক্যালরিযুক্ত খাবার নয়, এর সঙ্গে পর্যাপ্ত প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি যোগ করাও জরুরি।
প্রোটিনের উৎস : গ্রিক দই, মসুর ডাল, কালো মটরশুটি, চিকেন ব্রেস্ট।
ভালো চর্বির উৎস : অ্যাভোকাডো, অলিভ অয়েল।
এসব একত্রে খেলে শুধু ওজন কমবে না, বরং খাবারের পর দীর্ঘ সময় তৃপ্তি মিলবে এবং হঠাৎ ক্ষুধা লাগার প্রবণতাও কমে আসবে।
ওজন ঝরানোর জন্য কেমন খাবার খেতে পারেন
ডা. রাকেশের সাজেশন অনুযায়ী, দৈনন্দিন ডায়েট এভাবে সাজানো যেতে পারে—
ব্রেকফাস্ট : ওটমিল, গ্রিক দই ও বেরি।
দুপুরের খাবার : সবুজ শাক, গ্রিলড চিকেন, ছোলা ও সালাদ।
রাতের খাবার : মেরিনারা সস ও টার্কি মিটবলের সঙ্গে জুচিনি নুডলস।
সারসংক্ষেপ হলো, ওজন কমানো বা নিয়ন্ত্রণের জন্য খাওয়াদাওয়া বন্ধ করতে হবে না, বরং সঠিক খাবার বেছে নিতে হবে। শাকসবজি, ফল আর ভেষজ মসলার মতো কম ক্যালরিযুক্ত খাবার পেটও ভরাবে, শরীরও রাখবে সুস্থ।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
মন্তব্য করুন