ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের এ ঘোষণার পর কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
এই সিদ্ধান্তকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্য প্রথম জি-৭ দেশ হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়। এমন পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে।
এ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে স্টারমারের ডেপুটি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, একটি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে দাঁড়ানোর এটাই সঠিক সময়। তবে এ স্বীকৃতি রাতারাতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিবিসি জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্টারমার গাজার অনাহার ও সহিংসতাকে ‘অসহনীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন। এ ছাড়া পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি সম্প্রসারণ এবং সেখানকার সহিংসতা একটি কার্যকর দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করছে বলে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীরা মনে করছেন।
এদিকে যুক্তরাজ্যের ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার এ পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি এ পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করা’র শামিল বলে অভিহিত করেছেন।
নেতানিয়াহুর মতে, এটি হামাসের ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলাকে বৈধতা দেবে। তবে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীরা যুক্তি দিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদি শান্তিচুক্তির আশা টিকিয়ে রাখার জন্য এটি তাদের নৈতিক দায়িত্ব।
যুক্তরাজ্যের এ ঘোষণার পর কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া ফ্রান্স, পর্তুগাল, লুক্সেমবার্গসহ আরও কয়েকটি পশ্চিমা দেশ একই পথে হাঁটবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ধারণা করা হচ্ছিল, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে ঘোষণা দেবে। কিন্তু তার আগেই যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া স্বীকৃতি দিয়ে দেয়।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের প্রায় তিন-চতুর্থাংশই ইতিমধ্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের এ ঘোষণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ব্রিটেন সফরের পর এল। ট্রাম্প তখন বলেছিলেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে স্টারমারের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে একটি বিরল মতবিরোধের ক্ষেত্র।
এর আগে যুক্তরাজ্যের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। স্টারমার ও আব্বাস একমত হয়েছেন যে ভবিষ্যতে যেকোনো ফিলিস্তিনি শাসনব্যবস্থায় হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না।
মন্তব্য করুন