ঢাকা চিড়িয়াখানায় হায়েনার কামড়ে হাত বিচ্ছিন্ন শিশু সাঈদকে দেখতে সোমবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পঙ্গু হাসপাতালে উপস্থিত হন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
হাসপাতালের মডেল বি ওয়ার্ডে তারা চিকিৎসাধীন শিশু সাঈদকে দেখেন। এ সময় শিশুটির মা-বাবাকে সমবেদনা জানিয়ে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয় এবং ডাক্তারদের সাথে আলাপের পর মন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শিশু সাঈদ হাসান এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে এসেছি। ঢাকা চিড়িয়াখানায় তার যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি অত্যন্ত মর্মান্তিক, পীড়াদায়ক। আমি কাগজে দেখেছি তার বাবা আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়েছি।’
একইসাথে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তদন্তে যাদের গাফিলতি পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসেছে। পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে এ জন্য শুধু কর্তৃপক্ষ সচেতন থাকলে হয় না, মা-বাবারও অবশ্যই সচেতন থাকা প্রয়োজন। তবে এখানে কর্তৃপক্ষের যদি গাফিলতি থাকে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ সময় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের চিকিৎসা সম্পর্কেও কথা বলেন ড. হাছান। তিনি বলেন, ‘পঙ্গু হাসপাতাল বিশেষায়িত চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে চারশ বেডের পঙ্গু হাসপাতাল চালু হয়। পরবর্তীতে যারা সরকারে এসেছিল তারা মাত্র একশ বেড যুক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে আরেকটি নতুন প্রকল্প নিয়ে আরও পাঁচশ বেড যুক্ত করে এটিকে এক হাজার বেডে উন্নীত করেছেন। আজকে পঙ্গু হাসপাতাল সমগ্র দেশে দুর্ঘটনাসহ নানা কারণে অঙ্গহানিজনিত রোগীদের চিকিৎসা সেবায় একটি ভরসাস্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পঙ্গু হাসপাতালের ডাক্তাররাও ভালো কাজ করছেন। শিশু সাঈদকে তারা বিশেষ যত্ন নিচ্ছেন। ডাক্তাররা বলছেন, সে এখনো ছোট মাত্র ২ বছর ৩ মাস বয়স, বড় হলে তার কৃত্রিম হাত লাগানো সম্ভব হবে, এখন লাগালে তা ঠিক হবে না। হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল গণি মোল্লা, ডা. জাহাঙ্গীর, ডা. শবনম শায়লা প্রমুখ চিকিৎসকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।’
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে শিশু সাঈদকে নিয়ে তার বাবা সুমন ও মা শিউলি জয়দেবপুর থেকে মিরপুর চিড়িয়াখানায় যান। শিশু সাঈদ হায়েনার খাঁচার জালের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দিলে মুহূর্তের মধ্যে হায়েনার কামড়ে তার ডান হাতটি কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
মন্তব্য করুন