কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম
আপডেট : ২৭ মে ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
রয়টার্সের প্রতিবেদন

বাংলাদেশের রাজনৈতিক উত্তেজনার আড়ালে কী চলছে

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে এবং এর পেছনে একাধিক জটিল সামাজিক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা কাজ করছে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, যেখানে ভবিষ্যৎ রাজনীতির রূপরেখা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।

জনমনে অস্থিরতা বাড়ছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি আরও গভীর হচ্ছে, আর একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের অভাবে আগামী দিনের নেতৃত্ব নিয়ে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

সরকার এখনো পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময় ঘোষণা করেনি। যদিও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস পূর্বে বলেছিলেন, ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে জুন ২০২৬ এর মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তবে তারিখ অনির্দিষ্ট থাকার কারণে বিরোধীদলগুলোর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি স্পষ্ট জানিয়েছে—নির্বাচন অবশ্যই ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে হতে হবে, নয়তো তারা ইউনূস সরকারের প্রতি ‘সমর্থন পুনর্বিবেচনা’ করবে।

চাপে আরও আগুন লাগায় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্য, তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হওয়া উচিত।’ এই বক্তব্যকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা দেশের সেনা-অসন্তুষ্টির ইঙ্গিত হিসেবেও দেখছেন।

এদিকে, নতুন রাজনৈতিক দল ‘ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি’ বলছে, নির্বাচন আয়োজনের আগে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক সংস্কার অত্যাবশ্যক। দলের মুখপাত্র জানান, বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা, নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন এবং স্থানীয় প্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ না হলে, অবাধ নির্বাচন সম্ভব নয়।

ইউনূস সরকার যদিও ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (এনসিসি)’ গঠন করে রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করেছে, কিন্তু সাংবিধানিক সংস্কার ইস্যুতে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়ে গেছে। বিশেষ করে, দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন এবং বিচারব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ নিয়ে বিরোধ বাড়ছে।

জুনের শুরুতে দ্বিতীয় দফার সংলাপ শুরু হতে যাচ্ছে, তবে আলোচনায় কতটা অগ্রগতি হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি দেশের আইনশৃঙ্খলাও চাপে রয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক ও রাজনৈতিক কর্মীদের বিক্ষোভে শহরজুড়ে যানজট, বিশৃঙ্খলা এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, সরকারি চাকরিজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন—চাকরির শর্তাবলি ও বেতন কাঠামোতে বৈষম্য দূর করার। শিক্ষকরাও বেতন বৈষম্য ও নিয়োগপ্রক্রিয়ার সংস্কারের দাবিতে রাজপথে নেমেছেন। সরকার এসব দাবির মোকাবিলায় এখন চাপে পড়েছে।

এদিকে, আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সাজীব ওয়াজেদ সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে বলেন, ড. ইউনূস প্রতিশোধের রাজনীতি করছেন। আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে ধ্বংস করবে।

বিশ্লেষকদের মতে, পরিস্থিতি যদি দ্রুত শান্ত না হয় এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া যদি সর্বজনগ্রাহ্য না হয়, তবে সামনে আরও বড় রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তিনজনে এক নারী স্বামীর দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার : বিবিএস

ভারতের অধিনায়ক শান মাসুদ, হঠাৎ এমনটা কেন বললেন ধারাভাষ্যকার

গুঁড়া দুধ দিয়ে সহজ রসগোল্লা

টয়লেট সিটের চেয়েও বেশি জীবাণু রয়েছে বাড়ির যে ৫ জিনিসে

মা ও প্রেমিকাকে হারিয়ে নিজেকে শেষ করলেন ইসরায়েলি যুবক

বাসচালকের সিটে লুকানো ছিল ৩০ লাখ টাকার মাদক

হজে ব্যয় না হওয়া টাকা এজেন্সিগুলোকে ফেরত দেওয়া হবে : ধর্ম উপদেষ্টা

হেফাজতে ইসলামের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

অরিজিতের কাছে ভুল স্বীকার করলেন সালমান

শরীয়তপুরে কীর্তিনাশা নদীতে যাত্রীবাহী ট্রলারডুবি

১০

জাগপার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

১১

আরও ১৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি

১২

কপ৩০ সম্মেলনে আলোচনায় কী থাকছে

১৩

এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১৬ অক্টোবর

১৪

চমেক হাসপাতালে এসি বিস্ফোরণ

১৫

সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার সমীকরণ মেলাতে বাংলাদেশের সামনে যত সিরিজ

১৬

এ ঘৃণ্য কাজটি যারা করেছেন, নিজেদের বিবেককে প্রশ্ন করুন : রিপন মিয়া

১৭

তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার বড় পর্দায় দেখালেন ছাত্রদল নেতা তারিক

১৮

নিয়মিত ব্লাড প্রেশার মাপা শুরু করবেন কখন থেকে

১৯

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে শ্রমিকদের অবরোধ

২০
X