বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:২৬ পিএম
আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:১৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘সহিংসতা প্রতিরোধের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে’

ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান মিলনায়তনে ‘নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিষয়ে আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময় সভা’ অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান মিলনায়তনে ‘নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিষয়ে আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময় সভা’ অনুষ্ঠিত হয়।

নারী ও কন্যাকে সমান সামাজিক মর্যাদা দিতে হবে। সম্পত্তি বণ্টনে নারীকে তার প্রাপ্য দিতে হবে; ধর্ষণ ও যৌন হয়রানিসহ সব ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে পরিচালিত মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আইনজীবীদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে; সাংগঠনিক ক্ষেত্রে আইনি সহায়তা প্রদান কার্যক্রমে সহিংসতার শিকার কন্যাদের জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা থাকতে হবে; ইন্টারনেটের অপপ্রয়োগ বন্ধে কঠোরভাবে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। গৃহকাজে পুরুষদের এগিয়ে আসতে হবে।

‘জেন্ডারবান্ধব আইনাঙ্গন গড়ে তুলি, সহিংসতার শিকার নারী ও কন্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করি’- এই প্রতিপাদ্যর আলোকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান মিলনায়তন, জজ কোর্ট-ঢাকাতে ‘নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিষয়ে আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময় সভা’য় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেলা ও দায়রা জজ (ভারপ্রাপ্ত) ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (পঞ্চম আদালত) মো. ফেরদৌস ওয়াহিদ।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট এসএমএ সবুর; বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাতেন; ঢাকা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট রুমানা জামান রিতু এবং ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আনোয়ারা শাহজাহান। ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান মামুন। ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী শাহানারা ইয়াসমীন; ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট খন্দকার গোলাম কিবরিয়া (জোবায়ের) ও অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান খান (রচি)।

লিখিত বক্তব্যে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম বলেন, নারীবান্ধব বিভিন্ন আইনের প্রয়োগে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা দূর করে নারী বা কন্যার প্রতি ধর্ষণসহ সব ধরনের সহিংসতা নিরসন করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে পৃথক ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলেও বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে পৃথক ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। নারী নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তাগণ জেন্ডার সেনসিটিভ না হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার নারীকে বিচার নিশ্চিত করতে বেগ পেতে হয়।

তিনি আরও বলেন, নির্যাতনের ব্যাপকতা এমন হচ্ছে যে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আইনগুলো শুধু একাডেমিক চিন্তা না হয়ে, ব্যবহারিকভাবে কি কি করা যায় এটা সব আইনজীবীকে ভাবার আহ্বান জানানো হয়।

মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাড. শরীফুল আলম রাজীব; অ্যাড আওলাদ হোসেন; অ্যাড. মোর্শেদা খাতুন শিল্পী।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারী ও পুরুষের সামাজিক সম্পর্কের অসমতা, ক্ষমতা পুরুষের হাতে থাকায় নারী অধস্তন, নারী সহিংসতার শিকার হচ্ছে। আইনের কাঠামো তৈরি হয়েছে ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য। নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে বলা হয় কিন্তু কত ধরনের ও কতটা সহিংসতা নারীর ওপর হয় তার তথ্য সেভাবে নেই।

তিনি আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, সহিংসতার ঘটনার বিচার করার সময় নারীকে কেন্দ্রে রেখে সবকিছু খতিয়ে দেখতে হবে; বিচারের দীর্ঘসূত্রতা পরিহার করতে হবে; সহিংসতার শিকার নারীর আইনগত সহায়তা প্রদান, আইন সংস্কারে ও জনমত তৈরিতে নারী আন্দোলন এগিয়ে নিতে আইনজীবীদের এগিয়ে আসতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নাগরিক সমাজের মধ্যে বিশেষত বিজ্ঞ আইনজীবীদের সহায়তা নিয়ে পারিবারিক পরিমণ্ডলে নারীর সমতা, মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইনের খসড়া প্রণয়নেও আইনজীবীরা কেন্দ্রিক ভূমিকা পালন করেছেন। তবে প্রকৃত অর্থে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সমতা প্রতিষ্ঠায় আমরা এখনো পিছিয়ে আছি, পরিবর্তিত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ সামনে আসছে নারী আন্দোলনে, এর প্রতিফলন সমগ্র বিচার ব্যবস্থায়ও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি এ সময় তরুণ আইনজীবীদের সহিংসতার শিকার নারীদের আইনি সহায়তা দানের ক্ষেত্রে নিজ পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আইন সংস্কারের জন্য মানবাধিকার সনদগুলো আত্মস্থ করার জন্য, সনদের আলোকে আইনি সহায়তার রূপরেখা প্রণয়নে সহায়তা করতে নিজেদের হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। সভা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপপরিষদ সম্পাদক রেখা সাহা ও লিগ্যাল এইড উপপরিষদ সদস্য অ্যাড. হালিমা আক্তার।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মধ্যরাতে বরখাস্ত চট্রগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার

‘একসঙ্গে সমুদ্রে নেমে তো গোসল করতে পারব না’

জুলাই যোদ্ধার তালিকায় এক ব্যক্তির নাম ২ জায়গায়

বিএনপির অনুষ্ঠানে অপ্রীতিকর ঘটনায় মির্জা ফখরুলের প্রতিবাদ

রাজধানীতে শ্রমজীবী মানুষের মাঝে লায়ন্স ক্লাবের খাবার বিতরণ

জামায়াত-গণঅধিকার পরিষদের মতবিনিময় / নির্বাচনী জোট গঠনে একমত

উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, মাদ্রাসার সুপার কারাগারে

তারেক রহমান নেতৃত্ব না দিলে জুলাই আন্দোলন সফল হতো না : মুরাদ

চট্টগ্রাম নগরীতে ইউপিডিএফ সদস্য গ্রেপ্তার

‘প্রেমে ব্যর্থ হলে বাথরুম পরিষ্কার করি’

১০

মেয়ের জন্য চিপস আনতে গিয়ে প্রাণ হারান মোবারক

১১

১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় সংকটে মার্কিন ডলার

১২

তারেক রহমান জুলাই বিপ্লবের মূল নেতৃত্বে ছিলেন : অধ্যাপক মোর্শেদ

১৩

তারা ভেবেছে, নারীঘটিত বিষয় নিয়ে প্রচারে আমার ভোট কমে যাবে : আমির হামজা

১৪

পিআর পদ্ধতি নিয়ে বিএনপিকে চরমোনাই পীরের কড়া বার্তা

১৫

নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে : মান্না

১৬

ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার

১৭

৪ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করল পূর্বাচল আর্মি ক্যাম্পের সেনারা

১৮

চুক্তি নবায়নের পর মোনাকোয় ধারে গেলেন বার্সা তারকা ফাতি

১৯

উড্ডয়নের ৭ মিনিটেই মাটিতে আছড়ে পড়ল বিমান, সব আরোহী নিহত

২০
X