ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত আরও ১৫ জনকে খুঁজছে পুলিশ। বুধবার (১৯ জুলাই) বনানী থানার ওসি মো. মোস্তাফিজুর রহমান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় আরও ১৫ জনের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। রিমান্ডে থাকা আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে জড়িতদের সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গত সোমবার (১৭ জুলাই) ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণের শেষের দিকে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল ভোটকেন্দ্রের সামনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলা চালায়। মারধর থেকে বাঁচতে একপর্যায়ে হিরো আলম দৌড়ে পালিয়ে যায়। হামলাকারীরা এ সময় তাকে পেছন থেকে ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে তিনি বনানীর ২৩ নম্বর সড়কে গিয়ে একটি রিকশায় ওঠেন। পরে গাড়িতে করে চলে যান।
আরও পড়ুন: হিরো আলমের ঘটনায় ইইউ, যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৩ দেশ-জোটের বিবৃতি
এ ঘটনায় হিরো আলমের ব্যক্তিগত সহকারী সুজন রহমান শুভ বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় অজ্ঞাত ১৫ থেকে ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর পুলিশ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন সানোয়ার কাজী, বিপ্লব হোসেন, মেহেদী, মোজাহিদ, আশিক, হৃদয় ও সৈয়দ মোল্লা। তাদের মধ্যে ছানোয়ার কাজী ও বিপ্লব হোসেনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
এদিকে গতকাল বুধবার হিরো আলম তার জীবনের নিরাপত্তাহীতার জন্য পুলিশকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, আমার জীবনের নিরাপত্তাহীনতার জন্য পুলিশ প্রশাসন দায়ী। যেদিন আমার ওপর হামলা করা হয়, সেদিন যদি পুলিশ আমাকে গাড়িতে তুলে দিত, তাহলে হামলার হাত থেকে আমি রক্ষা পেতাম।
আরও পড়ুন: হিরো আলমের ওপর হামলায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের নিন্দা
নিজের জীবনের নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আজ ভোর সাড়ে ৫টার দিকে চারটি মোটরসাইকেল নিয়ে ৮ থেকে ১০ জন আমার মহানগর প্রজেক্টের অফিসে এসে নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। নিরাপত্তাকর্মীকে তারা বলেছেন, হিরো আলমকে ডাক দে, সে কোথায় থেকে লাইভ করছে, ওকে ডাক দে, ওর খবর আছে।
শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, সেদিন বাড়িতে যাওয়ার পর দেখি সারা শরীরে দাগ। বিভিন্ন জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধে আছে। আপাতত চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়েছি।
বিভিন্ন দেশের বিবৃতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যাপারটাকে আমি ভালো চোখেই দেখছি। আমার কথা হলো, আমাকে যদি কারোর পছন্দ না হয়, তাহলে ভোট দেবেন না। কিন্তু আমার গায়ে হাত তোলার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি।’
আরও পড়ুন: হিরো আলমের ওপর হামলা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন : মানবাধিকার কমিশন
তিনি ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বলেন, টাকা দিয়ে একপক্ষ ভোট কিনেছে। একটা মেয়ে একাই ৫০টা ব্যালট পেপারে সিল মেরেছে। এই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। আমাকে ইচ্ছা করেই হারানো হয়েছে।
রাজনৈতিক অবস্থানের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। আগেও একা ছিলাম, এখনও একা আছি। প্রয়োজনে নিজেই রাজনৈতিক দল তৈরি করব।’
তিনি বলেন, হামলাকারীদের সবাইকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। কিছু লোককে তারা আটক করেছে, যারা হামলা করেনি। কিন্তু মূল হামলাকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে।
মন্তব্য করুন