দেশে গণতন্ত্রহীনতার সংকট চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
রোববার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির নেতাদের বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে পরিষ্কার বুঝা যায়- দেশে সংকট রয়েছে। বিদ্যমান সংকট হলো গণতন্ত্রহীনতার সংকট। দুর্নীতি-অনাচারে দেশ ছেয়ে গেছে। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এই দুর্নীতি হচ্ছে। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দুর্নীতি করে দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলো শূন্য হয়ে যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, সীমান্তে মানুষ হত্যা হচ্ছে। নানা কারণে এক দফা দাবিতে আমরা লড়াই করব। এই এক দফা বাস্তবায়ন ছাড়া সংকটের সমাধান হবে না। এক দফার সে লড়াইটাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা শিগগিরই কর্মসূচি ঘোষণা করব। তার প্রেক্ষিত হিসেবে যুগপতের শরিকদের সঙ্গে এ বৈঠক হচ্ছে।
নজরুল ইসলাম বলেন, যারা দুর্নীতি ও লুটপাট করে দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে সরকার তাদের নিরাপদে দেশ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ নেই। মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি চিকিৎসা পর্যন্ত পাচ্ছেন না। আদালতের দোহাই দিয়ে খালেদা জিয়ার মৌলিক অধিকার চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
কোটা সংস্কারের আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নীতি-নির্ধারক বলেন, কোটা বাতিল নয়, সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। কোটা সংস্কার নিয়ে কয়েক বছর ধরে আন্দোলন চলছে, আন্দোলন জিইয়ে রাখা ঠিক না। সরকারের উচিত কোটা সংস্কারের ব্যবস্থা করা। প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীরা যখন শপথ গ্রহণ করেন তখন বলেন রাগের বশবর্তী কিংবা বিরাগভাজন হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিবেন না। কিন্তু আমরা দেখলাম প্রধানমন্ত্রী বিরাগভাজন হয়ে বলে দিলেন কোটা বাতিল হবে না। শিক্ষার্থীদের যুক্তিসঙ্গত দাবির প্রতি বিএনপির সমর্থন রয়েছে।
বৈঠকে নজরুল ইসলাম ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে ১২ দলীয় জোটের পক্ষে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আবদুল করিম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম প্রমুখ ছিলেন।
এদিকে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেল ৪টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণঅধিকার পরিষদ (মিয়া মসিউজ্জামান-ফারুক হাসান) এবং বিকেল ৫টায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির পক্ষে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু থাকবেন।
মন্তব্য করুন