আওয়ামী লীগের দলগতভাবে বিচার, নিবন্ধন বাতিল এবং রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সমাবেশ শুরু হয়েছে। এতে সামনের সারিতে দেখা গেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহতদের।
শুক্রবার (০২ মে) বিকেল তিনটায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এ সমাবেশ শুরু হয়।
দলটির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে সমাবেশে সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত আছেন। এছাড়া আহত এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত হয়েছেন।
দলটির যুগ্ম সদস্য সচিব ফয়সাল মাহমুদ শান্ত বলেন, আমরা আজ একটি ঐতিহাসিক মূহুর্তে উপস্থিত হয়েছি। জাতীয় নাগরিক পার্টির অস্তিত্ব তৈরি হয়েছে জুলাই আন্দোলনের শহীদ এবং আহতদের রক্ত দিয়ে। আমরা বলতে চাই শহীদদের রক্তের হিসেব না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না। যে আহত এবং পঙ্গুত্ব বরণ করেছে এবং শহীদদের পরিবারের সদস্যরা আজ উপস্থিত হয়ে সে সাক্ষ্যই আজ দিচ্ছে। আমরা বাংলাদেশের মানুষের উপর যে গুম খুন নির্যাতন হয়েছে তার বিচার করেই আমরা ঘরে ফিরব।
সমাবেশে উপস্থিত হয়ে শহীদ খালেদ সাইফুল্লাহর বাবা বলেন, আমার সন্তান হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই দেশে কোনো নির্বাচন হতে পারবে না, আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সন্তানেরা শান্তি পাবে না।
এদিকে, সমাবেশ উপলক্ষে গত কয়েকদিন গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করছে এনসিপি। গুলিস্তান, বাংলামটর, মিরপুরসহ কয়েক জায়গায় এ কার্যক্রম চলেছে। এতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশ নিতে দেখা যায়। লিফলেটে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে দলটি। এগুলো হলো—২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।
এ ছাড়া এনসিপির লিফলেটে চারটি দাবি উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো—প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।’
মন্তব্য করুন