যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক নিয়ে বিএনপি কাজ করবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘মার্কিন বাজারে রপ্তানির সঙ্গে বহু মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত। নতুন এই শুল্ক মোকাবিলায় সরকারকে সমন্বিত সহযোগিতা করা হবে।’
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর বনানী সেরিনা হোটেলে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে শুধু ৮ বিলিয়ন রপ্তানি নয়, এর সঙ্গে ১৫-১৬ লাখ মানুষের চাকরির বিষয়টিও জড়িত রয়েছে। আরও অনেক অর্থনৈতিক বিষয় জড়িত আছে। আমরা বড় একটা কঠিন সময় পার করছি। আমরা যদি সঠিকভাবে সমাধান না করতে পারি, তাহলে আমাদের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও শিল্প কারখানায় সবাই ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। সুতরাং আমরা আজকে রপ্তানিকারকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের মতামত শুনেছি।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফের সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়ও রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয় রয়েছে। আমরা আশা করি, দেশের স্বার্থে, আগামী দিনের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান এবং মানুষের জীবনযাপন অনেক নির্ভর করছে। সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে দেশের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সমাধান করতে হবে। এককভাবে কারও কোনো কিছু করার ক্ষমতা নেই, এটা অর্জন করতে সবাই মিলে সমন্বিত চেষ্টা করতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘৩৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে আমাদের যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করা কঠিন হবে। ভারত ও ভিয়েতনামের চেয়ে আমাদের ট্যারিফ বেশি হলে তা বড় প্রভাব ফেলবে। এ সমস্যা সমাধানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিএনপির পক্ষ থেকেও সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হবে। ব্যবসায়ী নেতারা নেগোসিয়েশনকে শক্তিশালী করার কথা বলেছে। বিএনপির পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নেগোসিয়েশনের সময় এখনো শেষ হয়নি।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আমীর খসরু বলেন, ‘সবকিছুর বিষয়ে এখনো অবগত নই। তবে সব মিলিয়ে আমাদের একটা জায়গায় আসতে হবে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের মতো এত বড় মার্কেট হারানোর পক্ষে নই। কারণ এর প্রতিফলনে দেশের অর্থনীতি ও মানুষের জীবনযাত্রা ক্ষতির মুখে পড়বে।’
বৈঠকে ব্যবসায়িক নেতাদের মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সহসভাপতি একে আজাদ ও সিমিন রহমান, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু, সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাসকিন আহমেদ, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, স্কয়ার ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, প্রাণ গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী, লেদার গুড়স অ্যান্ড মেনুফেকচারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ নিজাম মনসুর, সিরামিক মেনুফেকচারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাইনুল ইসলাম, ইকোনমিক জোনস ইনভেস্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এমএ জাব্বার, বাংলাদেশে টেরি টাওয়াল অ্যান্ড লেলিন মেনুফেকচারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আমীর খসরুর সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাসভীরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদি আমিন উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন