সরকার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হোতা মন্তব্য করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নেতারা বলেছেন, ব্যাংক ডাকাত, লুটেরা মাফিয়া ও বিদেশে অর্থপাচারকারীদের পৃষ্ঠপোষক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে ধর্ষণের মতো লোমহর্ষক ঘটনায় প্রতিবাদকারীদের দমন করতে সিদ্ধহস্ত।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি বন্ধ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণবিরোধী দেয়ালচিত্র আঁকার দায়ে ছাত্রনেতা অর্মত্য রায় ও ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীর বহিষ্কারাদেশ ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয় দলটি। এর অংশ হিসেবে ঢাকায় এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাষ্ট্রের ক্ষমতা কেন্দ্রের চরিত্রকে অনুকরণ করে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন দমনের হাতিয়ার হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে ব্যবহার করছে। ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতারা লোমহর্ষক ধর্ষণকাণ্ড ঘটিয়েছে। ধর্ষকদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ খোদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এমনকি শিক্ষাঙ্গণকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব অবহেলার দায়ে প্রশাসনকে অভিযুক্ত করছে শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু উন্মাদনা তৈরির অপচেষ্টা চালিয়ে আন্দোলনের নেতাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও কারান্তরীণ করার নীলনকশা এঁকেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তারা বলেন, লুটপাট-হত্যা-ধর্ষণ ইত্যাদি অপকর্মের ঢাল হিসেবে কখনো উন্নয়ন, কখনো বঙ্গবন্ধু আবার কখনো মুক্তিযুদ্ধের কথা বলা হচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা এভাবে নিজেদের অপরাধ আড়াল করার অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, রমজান সামনে রেখে এখন থেকেই মজুতদার ও বাজার সিন্ডিকেটের হোতারা জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি শুরু করেছে। সরকার এ বিষয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। কার্যত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বাজার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা অচল করে দেওয়া হয়েছে। সরকার মূল্যবৃদ্ধির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ভূমিকা পালন করছে।
বক্তারা বলেন, ক্ষমতাসীন সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে চরম বাজার নৈরাজ্য, সীমাহীন লুটপাট-অর্থপাচারের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে জীবনযাপনে প্রয়োজনীয় কোনো কিছুই আর সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে নেই। জরুরি ওষুধ, শিশুখাদ্য, ভোজ্য তেল, আমিষ এমনকি অতি সাধারণ শাকসবজির বাজার পরিকল্পিতভাবে গুটিকয়েক গোষ্ঠীর হাতে জিম্মি করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমস্ত চরিত্র হারিয়ে লুটেরাদের অর্থের জোগানদাতায় পরিণত হয়েছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সিপিবি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাইফুল ইসলাম সমীরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মঞ্জুর মঈন, জেলা কমিটির সদস্য আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ।
মন্তব্য করুন