সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেছেন, বাঙালির অসাম্প্রদায়িক উৎসব বাংলা নববর্ষ। বড় দুর্ভাগ্য স্বাধীন দেশে এই ঐতিহ্যপূর্ণ অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি চর্চা করার জন্য নানাভাবে হুমকির সম্মুখীন হতে হয়।
তিনি বলেন, যারা বাঙালির জাতিসত্তায়, জাতীয়তাবাদে, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রে বিশ্বাস করেন না তারাই আবহমান বাংলার সংস্কৃতিকে ধর্মের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। সংস্কৃতি, সব কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সংস্কৃতি কর্মীরা এই বিভাজনের বাইরে কাজ করবে।
মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে সুখী হোক ধরা প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিকেল ৪টায় বর্ষবরণ ১৪৩১ আয়োজনে এ কথা বলেন তিনি।
গোলাম কুদ্দুস বলেন, অন্য অনুষ্ঠান যদি সন্ধ্যার মধ্যে শেষ না হয়, তাহলে বাংলা নববর্ষ কেন সন্ধ্যার মধ্যে শেষ করতে হবে। এতে সাম্প্রদায়িকতার জয় হবে। প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছি রাত ৯টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার।
নাট্যজন রামেন্দ্র মজুমদার বলেন, বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আরও প্রসারিত হচ্ছে। বিদেশেও বাঙালিরা এই সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এটাকে নিয়ে যারা সমালোচনা করেন, ধর্মের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেন। তাদের জানা দরকার ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির কোনো বিরোধ নেই। সব ধর্মের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে। ধর্মের প্রতি আমাদের বৈরিতা নেই। ধর্মের বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে জনগণের মনে বিভ্রান্তির চেষ্টা করা হচ্ছে। এর ফলে সমাজে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে।
নাট্যজন মামুনুর রশিদ বলেন, আমরা দীক্ষিত হচ্ছি মানবিকতায় অসাম্প্রতিকতায়। গণতন্ত্র এবং সাম্যের সঙ্গে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু আমাদের চারদিকের দৃশ্যপট পাল্টে যাচ্ছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা বিমূর্ত হচ্ছে। এই বিমূর্তার মধ্য দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থা প্রসার লাভ করেছে। যার ফলে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের সরকারের ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র , গণতন্ত্রের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সারা দেশে আমরা অসাম্প্রদায়িক শিক্ষাব্যবস্থা চাই।
দলীয় সংগীত পরিবেশন করেন বহ্নিশিখা ও সুরতালীয় শিল্পীরা। স্পন্দনের অনিক মিত্রের পরিচালনায় ১২ নৃত্যশিল্পী, মুনমুন আহমেদের পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করেন নৃত্য শিল্পীরা। আতরের বঙ্গপালা পথনাটক পরিবেশিত হয়। বাউল গান পরিবেশন করেছেন লাভলী দেব, মমতা দাসী, রহিমা চৌধুরী, দেলোয়ার হোসেন, সোনিয়া আক্তার। আবৃত্তি করেছেন বেলায়েত হোসেন, রফিকুল ইসলাম, গোলাম সারোয়ার, সুপ্রভা সেব্রতী প্রমুখ।
মন্তব্য করুন