বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কি একেবারে রেস্ট্রিক্টেড ক্যান্টনমেন্ট? ক্যান্টনমেন্টেও তো যদি বৈধ মানুষ যেতে চায়, তাদের তো কোনো অসুবিধা হয় না। আর বাংলাদেশ ব্যাংক তো জনগণের আমানত রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান। এটা তো সব সময় অ্যাকাউন্টিবিলিটির মধ্যে থাকবে, এখানে সাংবাদিকরা তো যেতে পারে। সাংবাদিকরা তো দুবাইয়ে বাড়ি করেনি, তারা কেউ মালয়েশিয়া-কানাডায় বাড়ি করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকে যদি সাংবাদিকরা ঢুকতে না পারে, তাহলে কি মাফিয়া, মাস্তান, ঋণখেলাপিরা ঢুকবে?
সাংবাদিকরা বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢুকবে কেন?- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন প্রশ্নের জবাবে রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন রিজভী।
দেশের অর্থনীতির চিত্র তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের অর্থনীতি এখন ‘কৃষ্ণ নারীর মুখে লিপিস্টিক দেওয়ার মতো। প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার উধাও করে দেওয়া হয়েছে, এখন তলানির দিকে আসছে। বৈদেশিক রিজার্ভে ১৩ বিলিয়ন ডলার আছে সরকারের হাতে। যারা সচেতন জনগণ, বিজ্ঞ মানুষ- তারা বলছেন তা নয়, আসলে ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার রয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের পাওনা পরিশোধ করতে ৪ বিলিয়ন ডলার চলে যাবে। ডলার তো তলানিতেই।
রিজভী বলেন, আমরা একটা শূন্য গহ্বরের ভেতরে যেন বসবাস করছি। আমাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। কীসের ওপর দাঁড়িয়ে আছি- তা নিজেরাই বলতে পারব না। শুধু ব্যাংক থেকেই ১২ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে গেছে। এটা আমার বক্তব্য না, এটা সিডিপির বক্তব্য। আমাদের জিডিপি ১২ শতাংশ নাই হয়ে গেছে- এটা ভাবা যায়, এটা কল্পনা করা যায়- ৯২ হাজার কোটি টাকা শুধু ব্যাংক খাত থেকে লোপাট হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আজকে ঋণখেলাপি এক লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বলছে যে, এদের ৯০ শতাংশ হচ্ছে ক্ষমতাঘনিষ্ঠ লোকেরা। ২০২২ সালে ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। একটি দেশের উন্নয়ন মানে তো সবদিক থেকে উন্নতি। আমাদের আর্থিক অবস্থা সচ্ছল, ব্যাংকগুলো ভায়াবেল, আমরা ব্যবসা-বাণিজ্যে চরম উৎকর্ষতা লাভ করছি- এমন তো না।
দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, মঙ্গলবারে অনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন বর্জনের জন্য আমাদের নেতা-কর্মীরা জনগণের কাছে যাচ্ছেন, আহ্বান জানাচ্ছেন, লিফলেট বিতরণ করছেন। বর্জনের যে প্রস্তুতি সেটা সমান তালে চলছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই ভোট বর্জনের যে আহ্বান জানিয়েছেন, সেটাও ব্যাপকভাবে সাড়া পেয়েছে। মানুষ মনে করে, এই ডামি সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যাওয়া, সত্য ও ন্যায়ের বিরুদ্ধে যাওয়া। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস যে, প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনও জনগণ বর্জন করবে।
অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাশুকুর রহমান মাশুক, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন