বিশ্ব ফুটবলের নতুন মর্যাদাপূর্ণ মঞ্চে নতুন চমকের জন্ম দিল ফ্লুমিনেন্স। মার্টিনেলি ও হেরকিউলিসের গোলের ওপর ভর করে সৌদি জায়ান্ট আল-হিলালকে ২-১ গোলে হারিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি। সেমিতে তাদের প্রতিপক্ষ ইংলিশ জায়ান্ট চেলসি।
শুরুতে ম্যাচ শুরুর আগেই একটি মর্মান্তিক ক্ষণ দেখা যায়। প্রয়াত দিয়োগো জোতা ও তার ভাই আন্দ্রে সিলভার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। এরপর শুরু হয় এক সতর্কতামূলক লড়াই। প্রথম ১৮ মিনিটে কোনো উল্লেখযোগ্য আক্রমণ না দেখা গেলেও প্রথমার্ধের শেষভাগে নাটকীয়তা ছড়িয়ে দেন মার্টিনেলি।
৪০তম মিনিটে বাঁদিক থেকে বল কাট করে দারুণ গতিতে ঢুকে পড়েন মার্টিনেলি। বাঁ পায়ের দুর্দান্ত শটে বল জালে জড়ান তিনি। আল-হিলালের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো কেবল হতাশ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে পারেন।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আল-হিলাল সমতায় ফেরার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল। কলিদু কুলিবালির হেড ঠেকিয়ে চমৎকার সেভ করেন ফ্লুমিনেন্স গোলকিপার ফ্যাবিও। এরপরই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত— মার্কোস লিওনার্দো ডি-বক্সে পড়ে গেলে রেফারি পেনাল্টি দেন। তবে ভিএআর-এ দেখা যায়, বল পায়ে ছোঁয়ার আগে ফাউলের কিছুই ছিল না। সিদ্ধান্ত বদলে যান রেফারি।
বিরতি শেষে ফিরেই জ্বলে ওঠে আল-হিলাল। ৫১ মিনিটে রুবেন নেভেসের কর্নার থেকে কুলিবালির হেড লিওনার্দোর পায়ে লাগে, সেখান থেকেই গোল— ১-১।
কিন্তু সমতা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। পরিবর্তিত খেলোয়াড় হেরকিউলিস দ্বিতীয় রাউন্ডের মতো আবারও নায়ক। একবারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও ফিরতি বল পেয়ে নিখুঁত শটে বোনোকে পরাস্ত করেন এই মিডফিল্ডার।
ভাগ্য সহায়ক হলো চেলসির, পালমেইরাসকে হারিয়ে সেমিতে
অন্যদিকে, চেলসি নিজেদের কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল আরেক ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাসের। ম্যাচে দারুণ শুরু করেছিলেন কোল পাল্মার। ১৬ মিনিটে দুর্দান্ত স্কিলে গোল করে এগিয়ে দেন দলকে। তবে ১৮ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান তারকা এস্টেভাও (যিনি ভবিষ্যতে চেলসিতেই যোগ দেবেন) দ্বিতীয়ার্ধে একক নৈপুণ্যে ম্যাচে সমতা আনেন।
শেষ পর্যন্ত ভাগ্যের সহায়তায় জয় পায় ইংলিশ ক্লাবটি। মালো গুস্তোর ক্রস প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারে লেগে জালে জড়িয়ে যায়— ২-১ গোলেই শেষ হয় ম্যাচ।
সেমিফাইনালে চেলসি বনাম ফ্লুমিনেন্স: ইউরোপ বনাম লাতিন আমেরিকার মহারণ!
ফ্লুমিনেন্সের ফর্ম ও সাহসিকতা দেখে স্পষ্ট, চেলসিকে সহজে ছাড় দেবে না তারা। দুই ভিন্ন ফুটবল দর্শনের লড়াই, অভিজ্ঞতার বিপরীতে উদ্দীপনা— কে হাসবে শেষ হাসি?
মন্তব্য করুন