বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের দোকান ভাড়া ইস্যুতে রীতিমতো পুকুর চুরি হচ্ছে। অতীতে বিভিন্ন সময় ভাড়া পুনর্নির্ধারণের কথা শোনা গেলেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টম্বর) আকস্মিকভাবে স্টেডিয়াম পরিদর্শনে গিয়ে ভাড়া পুনর্নির্ধারণের কথা জানালেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রায় এক হাজার দোকান রয়েছে। দোকানগুলো প্রতি স্কয়ার ফিটের বিপরীতে এ ক্রীড়া স্থাপনার মালিকানা সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ভাড়া হিসেবে পায় ২৬ টাকা। অথচ যারা বর্তমানে দোকানে ব্যবসা পরিচালনা করছেন, প্রতি স্কয়ার ফিটের জন্য তাদের গুনতে হচ্ছে ২১৭ থেকে ২২০ টাকা! বর্তমান দোকানি ও এনএসসির মধ্যে রয়েছে কয়েক স্তরের মধ্যস্বত্বভোগী। এ সিন্ডিকেট ভাঙতে অতীতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল বটে, কাজের কাজ হয়নি। এ যাত্রায় আদৌ কিছু হবে কি না সময়ই বলবে!
বৃহস্পতিবার আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা ৫৪ নম্বার দোকানের ভাড়ার কাগজপত্র দেখতে চান। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি দোকানে থাকা লোকজন। তারা জানান, সময় দিলে কাগজপত্র দেখানো যাবে। পরবর্তী সময়ে দোকানে থাকা কর্মীরা মোবাইল ফোনে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় উপদেষ্টা বলছিলেন, ‘এক ঘণ্টার মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপে কাগজপত্র পাঠান। অন্যথায় এনএসসি থেকে এসে দোকানে তালা দিয়ে যাবে।’
বেশকিছু দোকান পরিদর্শনের পর আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া গণমাধ্যমে কথা বলেন। বিভিন্ন ক্রীড়া স্থাপনার দোকান ভাড়া ইস্যুতে চলমান নৈরাজ্য সম্পর্কে তিনি বলছিলেন, ‘সরকারি খাতায় স্কয়ার ফিট ভাড়া ২৬ টাকা। আমি প্রাথমিকভাবে যে তথ্য পেলাম, তাতে (বর্তমানে দোকানগুলো থেকে) ২১৭-২২০ টাকা স্কয়ার ফিট ভাড়া নেওয়া হয়। অতিরিক্ত ভাড়া কোথায় যায়, কার কাছে যায়—এটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। এগুলোর সঙ্গে মন্ত্রণালয় ও এনএসসির কেউ জড়িত কি না খতিয়ে দেখব।’
এ সময় ক্রীড়া উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এখানে এক হজারের মতো দোকান আছে, অন্য স্টেডিয়ামগুলোতেও আমাদের দোকান রয়েছে। সেগুলোও আমরা খতিয়ে দেখব। ২৬ টাকা স্কয়ার ফিট ভাড়া মান্ধাতা আমলের। সেটা কোনো স্ট্যান্ডার্ডেই পড়ে না।’ সবকিছু খতিয়ে দেখে নতুন করে ভাড়া নির্ধারণের ঘোষণা দিয়েছেন উপদেষ্টা। অতিরিক্ত অর্থ ক্রীড়া কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হবে বলে জানান তিনি।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কথায়, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা একটা সার্ভে করে নতুন করে বাজার ব্যবস্থা অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করব। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ কাজ বাস্তবায়ন করা যায় কি না খতিয়ে দেখব। অতিরিক্ত অর্থ এনএসসিতে যাবে, সেটা ক্রীড়া উন্নতির জন্য কীভাবে ব্যবহার করা যায়, সেদিকে আমাদের নজর থাকবে।’
মন্তব্য করুন