নাগরিক জীবনে একঘেয়ে আকাশের দিকে তাকানোর ফুরসত মেলে না। তবে যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন, আজ সূর্যাস্তের প্রায় ৪৫ মিনিট পর পশ্চিম আকাশে একবার তাকাবেন নিশ্চয়ই। কারণ, আজ গ্রীষ্মের সবচেয়ে সুন্দর রাতের আকাশ দেখা যাবে। অন্তত লাইভ সায়েন্সের বিশ্লেষকরা এমনই দাবি করছেন। জানা গেছে, আজ চাঁদ ও মঙ্গলগ্রহের মধ্যে এক অসাধারণ সংযোগ ঘটবে। একই সঙ্গে দেখা যাবে উল্কাবৃষ্টি।
জানা গেছে, আজ সোমবার (২৮ জুলাই) প্রায় ১৯ শতাংশ আলোকিত একটি বাঁকা চাঁদ দেখা যাবে মঙ্গলের ঠিক পাশেই। এ দুটি গ্রহ একে অপরের কাছাকাছি থাকবে মাত্র ১ ডিগ্রি ব্যবধানে। পৃথিবীর যে কোনো স্থান থেকেই এই দৃশ্য উপভোগ করা যাবে, তবে খোলা মাঠ বা পার্ক থেকে দেখলে আরও ভালো দেখা যাবে। যদিও মঙ্গলগ্রহ বছরের সবচেয়ে উজ্জ্বল সময় পেরিয়ে এসেছে, তবে এটি এখনো আকাশে লালচে এক উজ্জ্বল বিন্দুর মতো পরিষ্কার দেখা যায়। চাঁদ তখন প্রদর্শন করবে ‘আর্থশাইন’—অর্থাৎ চাঁদের অন্ধকার পাশটি পৃথিবী থেকে প্রতিফলিত সূর্যালোকে আলোকিত হবে, যা এক ধরনের ভৌতিক, মায়াময় আলো তৈরি করবে। এই দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যটি যখন চোখে পড়বে, তখন একাধিক উল্কাবৃষ্টি রাতের আকাশকে করে তুলবে আরও জমজমাট।
এ ছাড়া ভোরে সর্বোচ্চ তীব্রতায় দেখা যাবে পিসিস অস্ট্রিনিড উল্কাবৃষ্টি। যদিও এটি অপেক্ষাকৃত ছোট একটি উল্কাবৃষ্টি। প্রতি ঘণ্টায় পাঁচটি পর্যন্ত উল্কা দেখা যেতে পারে। তবে এটি শুধু শুরু—আরও তিনটি উল্কাবৃষ্টি কাছাকাছি সময়ে দেখতে পাওয়া যাবে। এরপর আগামী দুদিন রাতজুড়ে আরও দুটি উল্কাবৃষ্টি—ডেলটা অ্যাকুয়ারিড ও আলফা ক্যাপরিকর্নিড দেখা যাবে। ডেলটা অ্যাকুয়ারিডের পিক টাইমে আকাশ পরিষ্কার থাকলে প্রতি ঘণ্টায় ২০টির মতো উল্কা দেখা যেতে পারে। এর পাশাপাশি আলফা ক্যাপরিকর্নিড আরও পাঁচটি উল্কা যোগ করবে প্রতি ঘণ্টায়।
আরও একটি ভালো খবর হচ্ছে, চাঁদ ও মঙ্গল সূর্যাস্তের পর আকাশে মাত্র দুই ঘণ্টা থাকবে। তারপর ডুবে যাবে দিগন্তের নিচে। ফলে রাতভর আকাশে থাকবে না কোনো চাঁদের আলো—উল্কাবৃষ্টি দেখার জন্য এ এক চমৎকার সুযোগ। সবচেয়ে বড় চমক হলো পার্সিয়েডস—বছরের সবচেয়ে উজ্জ্বল উল্কাবৃষ্টি। এটি দেখতে জুলাইয়ের শেষের রাতগুলোই সবচেয়ে ভালো সময়।
মন্তব্য করুন