কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৬ পিএম
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বন্যার পানিও থামাতে পারেনি বিয়ে!

হাঁটু পানিতেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন ফিলিপাইনের এই প্রেমিক যুগল। ছবি : সংগৃহীত
হাঁটু পানিতেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন ফিলিপাইনের এই প্রেমিক যুগল। ছবি : সংগৃহীত

চারদিক থইথই পানি। কোথাও হাঁটু সমান তো কোথাও কোমর ডুবছে। ঝড়-বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে শহরের রাস্তা, গির্জা, অনুষ্ঠানস্থল সব কিছু। এমন দুর্যোগে যেখানে সাধারণত লোকজন ঘরের বাইরে পা রাখতে ভয় পান, সেখানে এক যুগল ঠিক করলেন- ভালোবাসার কাছে প্রকৃতির বাধা কিছুই নয়। তাই বন্যার পানিকে সাক্ষী রেখে, হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়েই সারলেন জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন—বিয়ে।

এই বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছে ফিলিপাইনে। বিয়ের পাত্র জেড রিক ভারদিলো এবং পাত্রী জ্যামাইকা আগুইলার দুজনেই একে অপরকে ভালোবাসেন প্রায় ১০ বছর ধরে। দীর্ঘ এই সম্পর্ককে আনুষ্ঠানিক রূপ দিতে ঠিক হয় বিয়ের দিন ২২ জুলাই। দুই পরিবার রাজি, বন্ধুবান্ধব উচ্ছ্বসিত, চলছে পুরোদমে প্রস্তুতি—পোশাক তৈরি, আমন্ত্রণপত্র পাঠানো, ভোজের আয়োজনসহ কিছুই বাদ যায়নি।

কিন্তু ঠিক সেই সময়ই আছড়ে পড়ে ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ‘উইফা’। অতিবৃষ্টির ফলে ব্যাপক জলাবদ্ধতা ও বন্যা দেখা দেয় দেশজুড়ে। বিয়ের জন্য নির্ধারিত বারাসোয়াইন গির্জাও পানিতে থই থই। কোথাও একচুল শুকনো জায়গা নেই। সবাই ধরে নিলেন—বিয়ে হয়তো স্থগিত হবে, অতিথিরা আসবেন না, আয়োজন ভেস্তে যাবে।

কিন্তু না—ভারদিলো ও আগুইলারের জন্য এ ছিল যেন ভালোবাসার চূড়ান্ত পরীক্ষা। তারা বুঝিয়ে দিলেন যে সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় টিকে যায়, তা প্রাকৃতিক দুর্যোগেও হার মানে না। তাই নির্ধারিত তারিখেই, পূর্বনির্ধারিত স্থানে, যেভাবে পারা যায়, বিয়েটা হতেই হবে। এই অদম্য মানসিকতা নিয়ে তারা দাঁড়িয়ে গেলেন গির্জার জলমগ্ন ফ্লোরে। হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে, একে অপরের হাতে হাত রেখে, মুখে হাসি নিয়ে তারা বললেন—‘হ্যাঁ, আমি রাজি।’

বিয়ের মুহূর্তে কেউ বরকে ধরে রাখছেন যাতে তিনি না পিছলে পড়েন, কেউ কনের পোশাক ধরে রেখেছেন যাতে তা পানিতে ভিজে না যায়। চারপাশে আতিথেয়তায় ভেসে বেড়াচ্ছেন অতিথিরাও—প্লাস্টিক চটিজুতা পরে, কখনো বা খালি পায়ে—কিন্তু মুখে একটাই কথা, ‘এটাই তো সত্যিকারের ভালোবাসা।’

এই ব্যতিক্রমী বিয়ের ছবি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেকেই বলেন, এ যেন সিনেমার চেয়েও বেশি নাটকীয়, বেশি আবেগঘন। আবার অনেকে এটিকে ভালোবাসা ও অঙ্গীকারের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন।

জ্যামাইকা ও ভারদিলোর এই বিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছে—ভালোবাসা যদি দৃঢ় হয়, তবে বন্যা, ঝড়, পানি—কিছুই তাকে থামাতে পারে না। তারা আমাদের মনে করিয়ে দিলেন, প্রকৃত ভালোবাসা কেবল আয়োজনের বিষয় নয়, তা একে অপরকে আঁকড়ে ধরার সাহসের নাম, কোনো পরিস্থিতিতে পিছু না হটার প্রতিজ্ঞার নাম।

এ যেন বিয়ের দিনে শুধু দুটি মানুষের নয়, বরং ভালোবাসারই জয় ঘোষণা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পুলিশের টহলগাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলি, এএসআইসহ আহত ৩

ছাত্রদলের ভোট বর্জনে শিবিরের প্রতিক্রিয়া

ভারী খাবারের পর মিষ্টি নাকি টক দই ভালো? যা বলছেন পুষ্টিবিদ

সাসটেইনেবল সিটি : বিশ্বের কোন কোন শহর এগিয়ে

জাকসুর ভোট গণনা নিয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন

ছাত্রদল-শিবির সংঘর্ষ, আহত ১০

অপু বিশ্বাসকে তামান্না ভাটিয়ার মতো লাগে : মিষ্টি জান্নাত

অযত্নে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার রেসকিউ বোট, দেখার কেউ নেই

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দল নিয়ে বড় ভবিষ্যদ্বাণী করলেন আশরাফুল

২৫ ঘণ্টা ধরে আমরণ অনশনে চবির ৯ শিক্ষার্থী

১০

নির্ধারিত সময়ে জাকসুর ভোটগ্রহণ শেষ না হওয়ার আশঙ্কা

১১

জাকসু নির্বাচন বর্জন করেছে ছাত্রদল

১২

নবীজিকে স্বপ্নে দেখার আমল

১৩

এক ইলিশ ৮ হাজার ৭৫০ টাকায় বিক্রি

১৪

জাতীয় নির্বাচন ভালো হবে, তার প্রতিফলন দেখা গেছে ডাকসুতে : প্রেস সচিব

১৫

স্বর্ণের দাম এখনো রেকর্ডের কাছাকাছি

১৬

তামিম-সাব্বির একই দলে, অধিনায়কের দায়িত্বে শান্ত

১৭

ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেসের ৩ বগি বিচ্ছিন্ন

১৮

নারীকে হত্যা করে অদ্ভুত কাণ্ড করল খুনি

১৯

মালয়েশিয়ায় ভিসা নীতি সহজ হওয়ায় সুবিধা পাচ্ছে ভারত ও চীনের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

২০
X