কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নেপালে জনরোষের শিকার রিপাবলিক বাংলার সাংবাদিক

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

নেপালে চলমান গণঅভ্যুত্থান নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্য করতে গিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম রিপাবলিক বাংলার এক সাংবাদিক জনতার ক্ষোভের মুখে পড়েছেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ক্ষুব্ধ এক তরুণ তার মুখে সজোরে চড় মারেন এবং গলায় থাকা প্রেস আইডি কার্ড ছিঁড়ে ফেলেন। মুহূর্তেই পুরো ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই সাংবাদিক নেপালের সংবেদনশীল পরিস্থিতি নিয়ে নেতিবাচক ও ভিত্তিহীন প্রশ্ন তুলছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে চলমান এই গণঅভ্যুত্থান নেপালি সমাজে গভীর প্রভাব ফেলছে, আর সেখানে কোনো রকম উসকানিমূলক মন্তব্য দ্রুতই জনরোষের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণ সাংবাদিকের মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হয়ে তার মুখে চড় মারেন, এরপর গলায় ঝোলানো আইডি কার্ড ছিঁড়ে ফেলে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পরে তাকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

এই ঘটনায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বাংলাদেশি নেটিজেনদের বড় একটি অংশ নেপালিদের এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানায়। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশকে নিয়ে রিপাবলিক বাংলার মিথ্যাচার ও বিদ্বেষপূর্ণ আচরণের যথাযথ জবাব দিয়েছে নেপালের তরুণরা, যা বাংলাদেশের মানুষ এতদিন করতে পারেনি।

আসলে রিপাবলিক বাংলা এবং এর সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ বাংলাদেশে বহুদিন ধরেই বিতর্কিত। বিশেষ করে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর চ্যানেলটির বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠেছে— মিথ্যাচার, ভুয়া তথ্য ছড়ানো, পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। এসব কারণে বাংলাদেশে ময়ূখ রঞ্জন ঘোষকে অনেকেই ব্যঙ্গ করে ‘মলম বিক্রেতা’ নামে অভিহিত করেন।

নেপালে ঘটনার পর দেশটির সাধারণ মানুষ রিপাবলিক বাংলাকে সরাসরি “গোদি মিডিয়া” বা পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদমাধ্যম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তারা মনে করেন, এই ঘটনা আসলে জাতীয় সম্মানের ওপর আঘাতের জবাব। অন্যদিকে বাংলাদেশের অনেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীও একে সময়োপযোগী প্রতিরোধ হিসেবে দেখছেন।

এ ঘটনার মাধ্যমে আবারও সামনে এসেছে সংবাদমাধ্যমের নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধের প্রশ্ন। উসকানিমূলক ও পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ পরিবেশন শুধু সমালোচনার মুখেই ফেলে না, বরং কখনো তা সরাসরি প্রতিরোধ ও জনরোষের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলস্বরূপ গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নেপালে রিপাবলিক বাংলার সাংবাদিককে ঘিরে ঘটে যাওয়া এই ঘটনাটি তাই কেবল একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং আঞ্চলিক গণমাধ্যমের দায়িত্ব, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতি সম্মান এবং ভুয়া তথ্য প্রচারের ভয়াবহতা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপির এক নেতাকে সব পদ থেকে বহিষ্কার

ঠোঁটের চারপাশে কি কালচে ছোপ, ২ সপ্তাহেই মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া উপায়

পুলিশের নতুন ইউনিফর্ম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

হাসিনার যেদিন ফাঁসি হবে, সেদিন কলিজা ঠান্ডা হবে : শহীদ সজলের মা

ছয় গোলের উৎসবে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করল জার্মানি

চবি ছাত্রদলের এক নেতার পদ স্থগিত

অভিজ্ঞতা হলো জীবনের সবচেয়ে বড় সঞ্চয়: দীপিকা পাড়ুকোন

বিকেএসপিতে চাইনিজ গভার্নমেন্ট স্কলারশিপ নিয়ে বিশেষ সেমিনার

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার প্রসঙ্গে যা বললেন ফয়েজ তৈয়্যব

কটাক্ষের শিকার অনন্যা

১০

৬৭৮ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং / ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের মালিকের বিরুদ্ধে সিআইডির মামলা

১১

রাজনীতিতে হাসিনার উত্থান-পতন যেভাবে

১২

সাগরপথে পাচারের সময় ৮ রোহিঙ্গা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪

১৩

কারও সঙ্গে ৩ দিনের বেশি কথা না বললে কী হয়? যা বলছে ইসলাম

১৪

দাম কমেছে বলছেন ট্রাম্প, কিন্তু জীবনযাত্রার ব্যয়ে ক্ষুব্ধ মার্কিনিরা

১৫

হঠাৎ মিষ্টি খেতে মন চায়, এটা কীসের ইঙ্গিত

১৬

দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

১৭

শেখ হাসিনার যত ভুল

১৮

কন্যার নাম ‘কুর্দিস্তান’ রেখে ফিলিস্তিনি বাবার বার্তা

১৯

সেই দিন রায় ঘোষণার আগে যা বলেছিলেন দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী

২০
X