

আকাশে দেখা মিলল চীনের অত্যাধুনিক গেমচেঞ্জার সামরিক বিমান। প্রথমবারের মতো ফ্লাইট পরিচালনা করা বিমানটির ছবি সোশ্যালে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপরই এ নিয়ে রহস্য বাড়ছেই। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানের সঙ্গে চীনের চলমান সামরিক উত্তেজনার মধ্যে, বেইজিং বিমানটি প্রকাশ্যে আনায় শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা।
সোশ্যালে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, টার্বোপ্রপ বিমানটিতে ৪টি ইঞ্জিন রয়েছে। ছয় পাখাযুক্ত প্রোপেলার থাকা বিমাটিতে টি-টেইল রয়েছে। ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে ধারণা করা হচ্ছে, বিমানটিকে রিফুয়েলিংয়ের কাজেও ব্যবহার করা হবে। এ ধরনের কাঠামো সাধারণত এয়ারবাস এ৪০০এম মডেলের বিমানে দেখা যায়।
চীনের অত্যাধুনিক এই সামরিক পরিবহন বিমানটি ডেভেলপ করেছে শানশি এয়ারক্রাফট করপোরেশন। প্রথমবারের মতো এই বিমান প্রদর্শন করা হয়েছিল ২০১৪ সালে ঝুহাই এয়ার শোতে। তখন বিমানের গায়ে ওয়াই-৩০ লেখা ছিল। তবে সাম্প্রতিকতম ছবিতে বিমানের গায়ে লেখা ছিল ১৫০০১। অর্থাৎ ভবিষ্যতে এই বিমানকে ওয়াই-১৫ হিসেবে নামকরণ করা হতে পারে।
জানা গেছে, বিমানটিতে সিনথেটিক ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে বিদ্যমান প্লেনগুলোর তুলনায় এটি অনেকটা হালকা। পেলোডসহ ট্যাংক পুরোপুরি ভরা থাকলেও উড্ডয়নের সময় বিমানটির সর্বমোট ওজন দাঁড়াবে প্রায় ৮০ টন। এটি চীনের সামরিক বাহিনীর বর্তমান পরিবহন প্লেন ওয়াই-২০-র চেয়ে প্রায় তিনগুণ কম।
ওয়াই-১৫ মডেলের বিমানটি সর্বোচ্চ ২০ টনের বেশি পেলোড ও ১১০ জন বহনে সক্ষম। বিমাটি প্রতি ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটার গতিতে উড়তে পারে। আর ফুল পেলোডসহ ৩ হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দেওয়াসহ ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আকাশে থাকতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক লকহিড সি-১৩০ হারকিউলিসের সঙ্গে এর বেশ মিল রয়েছে।
নতুন এই পরিবহন বিমানটি চীনের সামরিক বাহিনীর ওয়ার্কহর্স হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। মাত্র ১ হাজার ২০০ মিটারের কম পথ পাড়ি দিয়ে উড্ডয়ন এবং ১ হাজার ১০০ মিটারের কম রানওয়ে অবতরণ করতে সক্ষম এই বিমানটি। অর্থাৎ সংকীর্ণ পাহাড়ি উপত্যকা কিংবা ছোট দ্বীপেও এই বিমানটি অনায়সে উড্ডয়ন-অবতরণ করতে পারবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, এই বিমানগুলো নজরদারির কাজ করবে। সেক্ষেত্রে চীনের বিদ্যমান ওয়াই-৮ ও ওয়াই-৯ নজরদারি বিমানের জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হবে ওয়াই-১৫। যুদ্ধক্ষেত্রে এ ধরনের নজরদারি বিমান গেমচেঞ্জার হিসেবে কাজ করে। শত্রুর গোপন ঘাঁটি, যুদ্ধক্ষেত্র শনাক্ত এবং ডাটা ট্রান্সমিশনের এ ধরনের বিমানের জুড়ি নেই।
মন্তব্য করুন