গোটা বিশ্বকেই যেন যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি চাইছে একই সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসির প্রতিদ্বন্দ্বী বেইজিং ও মস্কোর সঙ্গে সমানতালে লড়াইয়ের সক্ষমতা অর্জন করতে। আর সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির পরামর্শও দিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
মার্কিন কংগ্রেশনাল কমিশন অন দ্য স্ট্র্যাটেজিক পোশ্চার অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সমানতালে যুদ্ধ চালিয়ে নিতে প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রচলিত ও পারমাণবিক বাহিনীকে আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। কংগ্রেশনাল কমিশন জানায়- বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় একেবারেই ভিন্ন, এমনকি স্নায়ুযুদ্ধকালীন পরিস্থিতির সঙ্গেও এর কোনো মিল নেই।
ছয়জন ডেমোক্রেট ও ছয়জন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতার দ্বারা গঠিত এই কমিশন জানায়, যুক্তরাষ্ট্র যেসব হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে তা মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। বছরব্যাপী পর্যালোচনার পর এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয় বলে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে ভূমিকায় কমিশনের চেয়ারম্যান ম্যাডেলিন ক্রিডন এবং ভাইস চেয়ার জন কাইল বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ দুটি পারমাণবিক প্রতিপক্ষ রয়েছে। যারা প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে আন্তর্জাতিক স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করে। যুক্তরাষ্ট্র কখনো এমন পরিস্থিতি প্রত্যাশা করেনি এবং তার প্রস্তুত নয়।
কমিশন জানায়, যদিও বর্তমানে একটি পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি একেবারেই কম। এমনকি চীন অথবা রাশিয়া কিংবা উভয় শক্তির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক সংঘাতের সম্ভাবনা অনিবার্য না হলেও তা ক্রমেই বেড়ে চলছে। ফলে মার্কিন ভূখণ্ডের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকিও ক্রমাগত বাড়ছে। কমিশনের প্রতিবেদনে চীন ও রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়েছে ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের হাতে অন্তত দেড় হাজার পরমাণু ওয়ারহেড থাকতে পারে।
মার্কিন কংগ্রেশনাল কমিশন জানায়, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটন ডিসির উচিত পরমাণু অস্ত্রের আধুনিকায়ন প্রকল্প আরও গুরুত্ব দিয়ে পরিচালনা করা যা ২০১০ সালে শুরু হয়েছে। কমিশনের মতে প্রকল্পের আওতায় সকল পরমাণু ওয়ারহেড, পরমাণু সরবরাহ ব্যবস্থা, পরমাণু কমান্ড-কন্ট্রোল ও যোগাযোগ উন্নত করা প্রয়োজন। এ ছাড়াও এশিয়া ও ইউরোপে আরও কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনের প্রস্তাবও দেয় কমিশন। পাশাপাশি বি-২১ স্টেলথ বোম্বার ও কলম্বিয়া ক্লাস নিউক্লিয়ার সাবমেরিন উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন