আবারও জেগে উঠেছে বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট মেরাপি। রোববার আগ্নেয়গিরিটিতে ভয়াবহ আকারে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। প্রাথমিক অগ্ন্যুৎপাতের পরে ১১ জন হাইকার অর্থাৎ হেঁটে ভ্রমণকারীকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১২ জন হাইকার।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, অগ্ন্যুৎপাতের সময় ওই এলাকায় ৭৫ জন পর্বতারোহী ছিলেন। তবে তাদের বেশিরভাগকে আগেভাগেই নিরাপদে সরিয়ে নিতে পেরেছিল কর্তৃপক্ষ। নিখোঁজ ১২ জন ছাড়া সোমবার সকালে তিনজন হাইকারকে উদ্ধার করা হয়েছে। যাদের শরীরের কিছু অংশ পুড়ে গেছে।
মাউন্ট মেরাপি ইন্দোনেশিয়ার সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর মধ্যে একটি। রোববারের অগ্ন্যুৎপাতের ফলে এটির ছাই ছড়িয়ে পড়ে ৩ কিমি দূর পর্যন্ত। রোববারের অগ্ন্যুৎপাতের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের বিশাল মেঘ আকাশজুড়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এবং গাড়ি ও আশেপাশের সব রাস্তা ছাইয়ের নিচে ঢাকা পড়ে গেছে। এই ঘটনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। সতর্কবার্তায় আগ্নেয়গিরির তিন কিলোমিটারের মধ্যে কাউকে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
৯ হাজার ৪৮৫ ফুট উচ্চতার মাউন্ট মেরাপি ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে পশ্চিমের দ্বীপ সুমাত্রায় অবস্থিত। দেশটির ইয়োগাকার্তা প্রদেশের রাজধানী থেকে মাত্র ২৮ কিলোমিটার উত্তরে মাউন্ট মেরাপি আগ্নেয়গিরির অবস্থান। আশপাশের জনবসতির ঝুঁকির বিষয়টি পর্যালোচনা করে ২০২২ সালে মেরাপির নিকটবর্তী সাত কিলোমিটার এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
চলতি বছরের মে মাসেও অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল মাউন্ট মেরাপিতে। সে সময় আগ্নেয়গিরিটি থেকে উত্তপ্ত লাভা ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের দুই কিলোমিটার দূর পর্যন্ত। মেরাপি আগ্নেয়গিরির শেষ বৃহত্তম অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল ২০১০ সালে। সেই অগ্ন্যুৎপাতে প্রাণহানি ঘটেছিল অন্তত ৩০০ জনের। ওই সময় মেরাপির আশপাশের এলাকা থেকে প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার বাসিন্দাকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় দেশটির কর্তৃপক্ষ। তবে মেরাপি আগ্নেয়গিরিতে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে ১৯৩০ সালে। ওই বছর মেরাপির অগ্ন্যুৎপাতে কমপক্ষে ১ হাজার ৩০০ জন নিহত হয়েছিলেন।
এশিয়ার বৃহত্তম দ্বীপদেশ ইন্দোনেশিয়া। সাড়ে ২৭ কোটির জন্যসংখ্যার এই দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প, অগ্ন্যুৎপাত ও সুনামির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ঘটে থাকে। সরকারি হিসাব মতে, দেশটিতে বর্তমানে ১২৭টি জ্যান্ত আগ্নেয়গিরি রয়েছে।
মন্তব্য করুন