ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ শহর তেল আবিবে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। হাজার হাজার ইসরায়েলি শহরটির কেন্দ্রস্থলে সমাবেশ করে গাজা যুদ্ধ বন্ধ করার এবং সেখানে বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের অবিলম্বে মুক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজ জানিয়েছে, তেল আবিবে হোস্টেজেস স্কয়ারে শনিবার (১০ মে) হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম তাদের সাপ্তাহিক সমাবেশ করে। একই সময় জিম্মিদের পরিবারের আরেকটি বিক্ষোভ ইসরায়েলি সামরিক সদর দপ্তরের বাইরে অনুষ্ঠিত হয়। তেল আবিবের হাবিমা স্কয়ারে আলাদাভাবে সরকারবিরোধী বিক্ষোভও হয়েছে।
টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শাই মোজেস নামে এক সাবেক জিম্মির স্বজন বলেন, হাবিমা স্কয়ারের বিক্ষোভ করছি। কারণ, ইসরায়েলের আসল শত্রু হামাস নয়, বরং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। যিনি ইসরায়েলকে একটি ইহুদি ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ধ্বংস করছেন।
আল জাজিরার সাংবাদিক হামদা সালহুত গাজায় এখনো বন্দী ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তাকে জিম্মিদের স্বজনরা বলেছেন, নেতানিয়াহু ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থে যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করছেন এবং যেকোনো ধরনের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে আপস করতে ইচ্ছুক নন। গাজায় এখনো ৫৯ জন জিম্মি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩৫ জনের মৃত্যু ইসরায়েলি কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। ২১ জনের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে এবং তিনজনের ভাগ্য এখনো অজানা।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, তারা গাজায় তাদের অভিযান সম্প্রসারণ করবে এবং এখনো কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির দিকে এগোনোর পরিকল্পনা করছেন না। তারা বলছেন, ‘জিম্মিদের মুক্তির জন্য সামরিক উপায়ই সবচেয়ে ভালো।’ কিন্তু জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা এবং ইসরায়েলি সমাজের বৃহত্তর অংশ সামরিক বাহিনীর এ নীতি সমর্থন করছেন না।
এদিকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২৩ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে আলজাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
উপত্যকায় মাসব্যাপী অবরোধের মধ্যে ইসরায়েল হামলা তীব্র করেছে। ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই উপকূলীয় এলাকায় মানবিক সংকট আরও ভয়ানক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১২৪ জন আহত হয়েছেন। আহতদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
মন্তব্য করুন