কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৪৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পেটে গুলিবিদ্ধ ছেলেকে রাস্তায় ফেলে পালাতে বাধ্য হন মা

গাজার শুজাইয়া এলাকা থেকে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা। ছবি : সংগৃহীত
গাজার শুজাইয়া এলাকা থেকে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা। ছবি : সংগৃহীত

গাজায় বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন। যে যার মতো শেষ সম্বল হাতে নিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীকে পেছনে ফেলার চেষ্টায় মরিয়া। হেঁটে চলা এ কাফেলায় আছেন শিশু থেকে বৃদ্ধ, তরুণ থেকে যুবক, এমনকি অন্তঃসত্ত্বা নারী। বুকভরা আর্তনাদ থাকলেও সবাই নিশ্চুপ। অজানা ভয়ে পেছনে তাকানোও যেন মানা।

কিন্তু মধ্য বয়স্ক এক নারী অঝোরে কাঁদছেন এবং বারবার পেছন ঘুরে ফেলে আসা পথে তাকাচ্ছেন। একপর্যায়ে তিনি মাঝ রাস্তায় থমকে দাঁড়ান। বাস্তুচ্যুতদের ভিড় তাকে এড়িয়ে সামনে এগোচ্ছে। যেন কেউ কারও নয়। কারণ, কে কাকে সান্ত্বনা দেবে? গোটা গাজাবাসীই যে কান্নারত।

যাই হোক, ক্যামেরা হাতে থাকা কোনো এক ব্যক্তি ওই নারীকে এড়াতে পারেননি। তিনি একা দাঁড়িয়ে থাকা নারীর দিকে এগিয়ে গেলেন। এ সময় ওই নারীর বুকে জমা সব আর্তনাদ যেন জলোচ্ছ্বাস হয়ে বাধা ভেঙে বেরিয়ে আসে। সেই চাপ সামলে নিতে না পেরে নারীর শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তিনি হয়তো ভাবছিলেন, কাফেলার সঙ্গে আর এগোতে পারবেন না।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি প্রচারিত হলে আবেগাপ্লুত হন বহু ব্যবহারকারী। মিডল ইস্ট আই ভিডিওটি পোস্ট করে লিখেছে, ‘যুদ্ধবিরতির সময় স্বস্তির আশায় থাকা ফিলিস্তিনিরা ফের শোকাহত প্রিয়জনদের কাছে ফিরে যাচ্ছে এবং তাদের দুর্দশার কথা লিখছে।’ সেসবের মধ্যে এটি একটি ভিডিও। যেখানে ওই নারী বলেন, ‘আমরা ব্যারাকে আমার ছেলেকে পেয়েছি। তার পেটে গুলি করা হয়েছে।’ কাঁদতে থাকেন নারী।

কোনো মতে শ্বাস নিয়ে নারী বলেন, ‘সে শহীদ হয়ে গেছে, এখন মৃত। আমি তাকে নিয়ে আসতে পারিনি। আমার সঙ্গে বহন করে আনতে পারিনি। ট্যাঙ্কগুলো আমার সামনে ছিল। আমার প্রিয়, আমার ছেলে, আমি তোমাকে রাস্তায় একা রেখে এসেছি।’

এ মায়ের আরও দুঃখের বিষয় হলো, তার ছেলে মায়ের কষ্ট কমাতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে পড়ে। পরিবারের জিনিসপত্র বহনে সাহায্য করার জন্য একটি ঠেলাগাড়ি খুঁজে আনতে চেয়েছিল সে। তাতে জিনিসপত্র রেখে ঠেলে নিরাপদ স্থানের দিকে যাবে। মা খালি হাতে থাকায় হাঁটার কষ্ট কমবে। কিন্তু তা আর হলো কই। ছেলেকেই ফেলে আসতে হলো। কিন্তু জিনিসপত্র ঠিকই সঙ্গে আনছেন ওই নারী। দুটি বড় আবর্জনার ব্যাগে তা ভরে অজানা স্থানে বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে গাজায় নতুন আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে কমপক্ষে ১৫৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

তবে নিহতের সংখ্যা আরও বেশি। কারণ, অনেকের মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। অনেককে ওই ছেলের মতো মা-বাবা রাস্তায় আহত বা নিহত অবস্থায় ফেলে এসেছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ / একের পর এক ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করছে মোদি সরকার

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াতের বৈঠক অনুষ্ঠিত

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-চ্যানেল আই অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ডের কার্যক্রম শুরু

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির নতুন ভিসি ফরিদ আহমদ সোবহানীর যোগদান

এনবিআরে দিনভর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আন্দোলনকারীরা

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিতে ‘রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী’ উদযাপন 

ভিডব্লিউবি কার্ড দেওয়ার নামে এনসিপির সদস্য পরিচয়ে অর্থ দাবি

ইসরায়েলের হামলায় এক চিকিৎসক পরিবারের ৯ সন্তান নিহত

তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর বিরুদ্ধে সাবেক স্বামীকে অপহরণ চেষ্টার অভিযোগ

কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তারেক রহমানের শ্রদ্ধাঞ্জলি 

১০

গোয়াফেস্টে দুটি মিডিয়া অ্যাবি অ্যাওয়ার্ড জিতল এশিয়াটিক মাইন্ডশেয়ার

১১

দ. আফ্রিকায় খনি থেকে ২৬০ শ্রমিককে জীবিত উদ্ধার

১২

নোবিপ্রবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক শিবলুর রাহমান

১৩

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির মিটিংয়ে যা হলো

১৪

একজনের নামে কয়টি সিম থাকবে, জানাল বিটিআরসি

১৫

প্রিমিয়ার লিগের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হলেন সালাহ

১৬

একদফা দাবিতে নার্সিং শিক্ষার্থীদের লাঠি মিছিল

১৭

গাজায় ‘হিরোশিমা-নাগাসাকি’ ধাঁচে হামলার আহ্বান মার্কিন কংগ্রেসম্যানের

১৮

অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনায় ২ ডাকাত গ্রেপ্তার

১৯

ভারতের পানি বন্ধের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের জোর প্রস্তুতি

২০
X