মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর ও ইরানবিষয়ক মন্তব্যকে ‘মিথ্যা ও ভণ্ডামিপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
তিনি বলেন, ট্রাম্প মুখে শান্তির কথা বলেন, অথচ তার আমেরিকাই ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় শিশুদের হত্যায় ব্যবহৃত ১০ টন বোমা দেয় ইসরায়েলকে। তার মুখে মধু, অন্তরে বিষ।
খামেনি বলেন, ট্রাম্পের এমন মন্তব্য উত্তর দেওয়ার যোগ্য নয়। এটি বক্তার জন্যই লজ্জার বিষয়। শুক্রবার (১৬ মে) তেহরানের এক মসজিদে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর শেষে এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ইরানকে দ্রুত মার্কিন প্রস্তাব মেনে নেওয়া উচিত, নইলে খারাপ কিছু ঘটতে পারে।
এর জবাবে খামেনি বলেন, এই অঞ্চলের অশান্তি ও সংঘাতের মূল উৎস হচ্ছে ইসরায়েলি শাসন- একটি ক্যানসারের মতো বিপজ্জনক অস্তিত্ব, যা একদিন নিশ্চিহ্ন হবে, ইনশাআল্লাহ।
এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানও ট্রাম্পের শান্তির আহ্বানকে ভণ্ডামি বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, একদিকে ট্রাম্প শান্তির কথা বলেন, অন্যদিকে গণহত্যার উন্নত অস্ত্র নিয়ে হুমকি দেন। আমরা কোনটিকে বিশ্বাস করব? পেজেশকিয়ান স্পষ্ট করেন, ইরান আলোচনায় প্রস্তুত, কিন্তু হুমকিতে মাথা নত করবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, তবে নিজেদের অধিকার থেকে একচুলও সরব না। আমাদের অটল অবস্থানকে কেন্দ্র করে ইরানকে অস্থিতিশীলতার উৎস বলাটা অন্যায়।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এক্সে এক পোস্টে জানান, তেহরান এমন কোনো প্রস্তাব পায়নি। তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার কখনো ছাড়ব না।
আরাগচি আরও অভিযোগ করেন, ওয়াশিংটন তাদের অবস্থান বারবার পরিবর্তন করে। বারবার নতুন শর্ত আরোপ আলোচনাকে অগ্রগতির বদলে দীর্ঘায়িত করছে, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।
গত সপ্তাহে ওমানে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনার চতুর্থ দফা শেষ হয়। পরবর্তী বৈঠকের দিনক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি। তবে স্পষ্ট হয়ে উঠছে, দু’পক্ষের মধ্যে অনাস্থা ও বিভ্রান্তি যেন আরও গভীর হচ্ছে।
মন্তব্য করুন