ফিলিস্তিনের গাজা পুরোপুরি ধ্বংসে ভয়াবহ মাত্রায় অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। এর মধ্যেও মাঝেমধ্যে গাজা থেকে প্রতিরোধের খবর আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় রকেট হামলার সাইরেনে ঘুম ভাঙল ইসরায়েলিদের।
ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সম্প্রদায়ের দিকে দুটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। একটি রকেট প্রতিহত করা হলেও দ্বিতীয়টি জনবসতিহীন এলাকায় আঘাত হানে।
প্রায় তিন সপ্তাহের মধ্যে গাজা থেকে এটিই প্রথম রকেট নিক্ষেপের ঘটনা। রকেটের আঘাতে নেটিভোট শহর এবং আশেপাশের বেশ কয়েকটি সম্প্রদায়ে সাইরেন বেজে ওঠে। লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে তৎপর হয়ে উঠে বিশেষ বাহিনী। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই বিপদ কেটে গেছে বলে নাগরিকদের জানায় আইডিএফ।
ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে কোনো আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। স্থাপনা ক্ষয়ক্ষতিরও কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে তারা সতর্ক রয়েছেন এবং পরবর্তী ঘটনায় নজর রাখছেন।
গাজায় ইসরায়েলের টানা ৭০০ দিনের হামলায় প্রায় পুরো ভূখণ্ড ধ্বংস হয়ে গেছে। গাজা সরকারের গণমাধ্যম দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, অবকাঠামোর ৯০ শতাংশই ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৮০০ কোটি ডলারেরও বেশি।
এ হামলা শুধু ধ্বংসযজ্ঞ নয়, বরং পদ্ধতিগত গণহত্যা ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি নীতির প্রতিফলন। এ পর্যন্ত ৭৩ হাজার ৭০০ জন নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে আছেন ২০ হাজার শিশু ও ১২ হাজার ৫০০ নারী। প্রায় ২ হাজার ৭০০ পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
এ ছাড়া নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৬৭০ স্বাস্থ্যকর্মী, ২৪৮ সাংবাদিক, ১৩৯ সিভিল ডিফেন্স সদস্য ও ১৭৩ পৌর কর্মী। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১ লাখ ৬২ হাজার মানুষ। অনেকেই অঙ্গচ্ছেদ, পক্ষাঘাত বা দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
হামলায় ৩৮টি হাসপাতাল, ৮৩৩টি মসজিদ এবং ১৬৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়েছে। হাজার হাজার সরকারি ভবনও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবুও ইসরায়েল বলছে, ‘তাদের হামলার একমাত্র লক্ষ্যবস্তু হামাস সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য এবং তাদের ব্যবহৃত স্থাপনা। হামাস ধ্বংসের মাধ্যমেই কেবল এ যুদ্ধ থামতে পারে।’
মন্তব্য করুন