ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে দ্বিমত দেখা দিয়েছে। ফলে এ প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ না হওয়ার আশঙ্কা করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বুধবার (২২ মে) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (২১ মে) মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে এক শুনানিতে তিনি এ আশঙ্কা করেন। সৌদি ইসরায়েলের মধ্যকার সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে এই প্রথম কোনো মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি করছে সৌদি আরব। তবে ইসরায়েল এটি আগায়ে নিতে আগ্রহী নয়।
ইসরায়েলকে ইংগিত করে তিনি বলেন, তারা প্রতিষ্ঠাকালীন চাওয়া অর্জন করার জন্য এ সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চায় কি না- তা তাদের অবশ্যই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কংগ্রেসের শুনানিতে ব্লিঙ্কেন ডান ও বামপন্থিদের উভয়পক্ষের সমালোচনার মুখে পড়েন। রিপাবলিকানরা বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ করেন। তাদের দাবি, ডেমোক্র্যাট সরকার গাজার বেসামরিক লোকদের সাহায্য করার জন্য খুব একটা কাজ করেনি।
ডেমোক্র্যাটিক দলের নিয়ন্ত্রণে থাকা সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সামনে শুনানি শুরুর সময় বিপাবলিকানরা তাকে বাধা দেন। এ সময় তারা সেখানে চিৎকার করে বলতে থাকেন, ব্লিঙ্কেনের হাতে রক্ত লেগে আছে। এ ছাড়া এক প্রতিবাদকারী ব্লিঙ্কেনের ওপর আক্রমণের চেষ্টা করেন। তিনি তাকে অপরাধী বলে আখ্যা দেন। পরে ওই বিক্ষোভকারীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বের করে নিয়ে যান।
এর আগে নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বিখ্যাত কলামিস্ট থমাস ফ্রাইডম্যান উল্লেখ করেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হলে সৌদিকে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা দিবে। তিনি লিখেন, ইসরায়েলকে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য সৌদির শর্ত মানতে হবে। তবেই এ সম্পর্ক স্থাপিত হবে। এ শর্তগুলো হলো গাজা থেকে সরে যাওয়া, বসতি স্থাপন বন্ধ করা এবং তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করা।
থমাস ফ্রাইডম্যান লিখেন, ইসরায়েলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অধীনে এ চুক্তি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে সৌদির শর্ত মেনে নেওয়ার মতো ইসরায়েলে কোনো সরকার এলে তখন চুক্তি হতে পারে।
মন্তব্য করুন