

বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য ১ লাখ টন চাল ক্রয়ে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তান (টিসিপি)। সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
টিসিপির ২০ নভেম্বর প্রকাশিত টেন্ডার অনুযায়ী, ২৮ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১ টার মধ্যে মূল্য প্রস্তাব জমা দিতে হবে। ডনের হাতে পাওয়া নথিতে বলা হয়েছে, করাচি বন্দর দিয়ে ব্রেক-বাল্ক কার্গোর মাধ্যমে বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য ১ লাখ টন লং গ্রেইন সাদা চাল ক্রয়ে কোম্পানি, পার্টনারশিপ বা ব্যক্তিগত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।
টেন্ডারে মূল্য প্রস্তাব জমাদানের পর ২১ কার্যদিবস পর্যন্ত বৈধ থাকা, চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে চাল রপ্তানি উপযোগী করা এবং ন্যূনতম বিড ২৫ হাজার টন, এরপর তার গুণিতক; সর্বোচ্চ ১ লাখ টন পর্যন্ত শর্তারোপ করা হয়েছে। এছাড়া চাল অবশ্যই পাকিস্তানের সর্বশেষ ফসল থেকে হওয়ার, চাল মানবভোগের উপযোগী হওয়া এবং দুর্গন্ধ, ছত্রাক, বিষাক্ত আগাছা, পোকামাকড় বা সংক্রমণের কোনো চিহ্ন থাকা চলবে না বলে শর্ত দেওয়া হয়েছে।
রয়টার্স জানায়, পাকিস্তানি চালকে বাংলাদেশি আমদানিতে অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাব্য পদক্ষেপ হিসেবে টেন্ডারটি দেখা হচ্ছে। বাজারে ধারণা রয়েছে, বাংলাদেশ এর আগের কিছু চালের চাহিদায় ভারতীয় উৎসের চালও ব্যবহার করতে পারে।
বাংলাদেশ সোমবার আরও একটি চাল আমদানির টেন্ডার ঘোষণা করেছে, যা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্য স্থিতিশীল রাখতে ধারাবাহিক টেন্ডারের অংশ।
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের সরকার প্রথমবারের মতো সরাসরি সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) চাল বাণিজ্য শুরু করে, যার আওতায় ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করে বাংলাদেশ। এছাড়া গত মাসে অনুষ্ঠিত নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠকে পাকিস্তান ঢাকাকে আঞ্চলিক দেশগুলোর (চীন ও মধ্য এশিয়া) সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য করাচি বন্দরকে গেটওয়ে হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বলে প্রস্তাব দেয়।
ডন জানিয়েছে, ২০২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পাকিস্তানের চাল রপ্তানি ২৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। রপ্তানি খাতের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ভারতের ২০২৪ সালে চাল রপ্তানি পুনরায় শুরু করা, বাসমতির সর্বনিম্ন রপ্তানি মূল্য তুলে নেওয়া এবং চাল রপ্তানিতে শূন্য শুল্ক আরোপ করার কারণে পাকিস্তান প্রতিযোগিতায় চাপের মুখে পড়েছে।
তবে পাকিস্তান সরাসরি মূল্যযুদ্ধে না যাওয়ায় ভারতের বাজারে ফিরে আসা রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারেনি। ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তান উচ্চমানের বাজারে তাদের অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় পাকিস্তান মার্কিন বাজারে শেয়ার বাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে।
গ্লোবাল ট্রেড প্ল্যাটফর্ম ভলজার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পাকিস্তানের মোট বাসমতি রপ্তানির ২৪ শতাংশ গেছে যুক্তরাষ্ট্রে।
মন্তব্য করুন