ব্রাজিলের সাওপাওলো শহর থেকে ৩৩ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝখানে অবস্থিত একটি দ্বীপ, যে দ্বীপকে পৃথিবীর ভয়ংকর এবং মারাত্মক দ্বীপ বলা হয়। বিশ্বের ভয়ংকর সব বিষাক্ত সাপের বাস এই দ্বীপে। যেখানে গেলে কেউ আর বেঁচে ফিরতে পারবে না বলে অনুমতিও দেওয়া হয় না।
প্রায় ১১ হাজার বছর আগে সমুদ্রপৃষ্ঠের উত্থানে ব্রাজিলের মূল ভূ-ভাগ থেকে দূরে এটিকে এক দ্বীপে পরিণত করে। স্থানীয়ভাবে দ্বীপটি ইলহাদা কুইমাদা গ্রান্দে নামে পরিচিত। প্রায় ২০ মাইল দীর্ঘ দ্বীপটিতে শুধু সাপেরই বসবাস। পৃথিবীর অন্যান্য বিষাক্ত সাপগুলি হাজার হাজার সংখ্যা আছে এখানে।
দ্বীপটিতে পাওয়া বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক এবং বিষধর সাপের মধ্যে অন্যতম পিট ভাইপার। যার প্রধান আবাসস্থল এই দ্বীপ। সাধারণ বিষধর সাপের থেকে এই সাপ কয়েকগুণ বেশি বিষধর হয়ে থাকে।
বলা হয় এই দ্বীপটিতে ৪ লাখের বেশি সাপ হয়েছে। কিন্তু এতো সাপ এখানে আসলো কিভাবে? জনশ্রুতি আছে, শত বছরের বেশি সময় আগে, জলদস্যুরা লুট করা স্বর্ণ এবং অর্থ এই দ্বীপে লুকিয়ে রাখতেন। কেউ যাতে সেগুলো হাত দিতে না পারে এজন্য কয়েকটি বিষাক্ত সাপ দ্বীপে ছেড়ে দিয়েছিলেন তারাই। সেই সোনার লোভে বারেবারেই সেখানে গেছে মানুষ। কিন্তু শোনা যায়, তারা কেউই ফেরেনি।
আস্তে আস্তে গোটা দ্বীপ সাপে ভরে যায়। এরপর থেকে হয়ে যায় স্নেক আইল্যান্ড। ব্রাজিলের সাওপাওলোবাসীর কাছে দ্বীপটি সাপের দ্বীপ বা আইল্যান্ড অফ স্নেক নামেই পরিচিত। হাজার হাজার পিট ভাইপার থাকা এই দ্বীপে স্থলচর প্রাণী একেবারে নেই বলা যায়। পরিযায়ী পাখি এবং সাগরীয় পক্ষীসমূহ এখানে অবতরণ করলেই সাপগুলোর খাদ্য হয়ে যায়।
দ্বীপটিতে সরকারিভাবে কোনও মানুষের প্রবেশাধিকার নেই। জাহাজের যাতায়াতের সুবিধার জন্য এই দ্বীপটিতে একটি লাইট হাউস তৈরি করা হয়েছিল ১৯০৯ সালে। এরপর থেকে অটোমেটিক সিগন্য়াল ব্যবস্থা প্রবর্তনের আগে পর্যন্ত দু-একজনের বসবাস। তারপর থেকে একেবারে জনমানব শূন্য দ্বীপটি।
বিশ্ববাজারে পিট ভাইপার নামের বিষাক্ত এই সাপের চাহিদা থাকায় চোরা কারবারিরা বেশ তৎপর। তবে সাধারণ মানুষ যাওয়ার সাহস করে না কখনো।
মন্তব্য করুন