কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০২:২৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন

আরও একটি ধাপ পার করলেন কমলা হ্যারিস

কমলা হ্যারিস। ছবি : সংগৃহীত
কমলা হ্যারিস। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আরও একটি ধাপ পার করলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভোট পেয়ে গেছেন তিনি। ফলে তিনিই সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী থাকছেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) প্রেসিডেন্ট প্রার্থী চূড়ান্ত করতে ভোটগ্রহণ শুরু করে ডেমোক্রেটিক পার্টি। ইমেইলে এ ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। চলবে আগামী সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। কিন্তু শুক্রবারের (২ আগস্ট) হিসাবেই প্রার্থী হতে প্রয়োজনীয় ভোট পেয়ে যান কমলা হ্যারিস। শনিবারের হিসাবে তার ঝুলিতে যোগ হতে থাকে অতিরিক্ত ভোট। পার্টির ‘ন্যাশনাল কমিটি চেয়ার’ জেইম হ্যারিসন ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পরিস্থিতি বলছে, সব কিছু ঠিক থাকলে কমলা হ্যারিসই পার্টির মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন। প্রথম কোনো কৃষ্ণাঙ্গ ও এশিয়ান আমেরিকান নারী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন তিনি। বিজয়ী হলে তা হবে আমেরিকার জন্য নতুন ইতিহাস।

এ ব্যাপারে কমলা হ্যারিস বলেন, তাকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে প্রতিনিধিরা পছন্দ করার জন্য তিনি সম্মানিত বোধ করছেন। আগামী সপ্তাহে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীর মনোনয়ন গ্রহণ করবেন। এরপর চলতি মাসের শেষের দিকে শিকাগোতে দলের সম্মেলনে সবার সঙ্গে যোগ দেবেন। সেখানে তিনি তার এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত সবার সঙ্গে উদ্‌যাপন করবেন।

কমলা হ্যারিস (৫৯) নিজেকে কৃষ্ণাঙ্গ এবং দক্ষিণ এশিয়ান হিসেবে পরিজয় দিয়ে আসছেন। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ভারতীয় এবং বাবা জ্যামাইকান বংশোদ্ভূত। মার্কিন ইতিহাসে তিনি প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ এবং এশীয়-আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট।

এদিকে দিন যত গড়াচ্ছে ততই সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন। তিনি কমলার জাত নিয়েও জানতে চেয়েছেন। তিনি জানতে চেয়েছেন, কমলা হ্যারিস ভারতীয় নাকি কৃষ্ণাঙ্গ? বুধবার (৩১ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ সাংবাদিকদের সংগঠন ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ব্ল্যাক জার্নালিস্টের বার্ষিক সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প এ কথা বলেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলাকে আমি অনেক দিন ধরে চিনি। তিনি সব সময় ভারতীয় ছিলেন। শুধু ভারতীয় ঐতিহ্য প্রাধান্য দিয়েছিলেন। কয়েক বছর আগে তিনি নিজেকে কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে পরিচয় দেওয়ার আগে আমি জানতাম না, কমলা একজন কৃষ্ণাঙ্গ। এখন তিনি কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে পরিচিত হতে চান।

তিনি আরও বলেন, আমি আসলে জানি না, কমলা ভারতীয়, নাকি কৃষ্ণাঙ্গ। তবে আমি দুই পরিচয়কেই শ্রদ্ধা করি। কিন্তু নিশ্চিতভাবে কমলা সেটি করেন না। কারণ, তিনি শুরু থেকেই ভারতীয় ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ কৃষ্ণাঙ্গ মানুষে পরিণত হলেন।

কমলাকে আক্রমণ করে ট্রাম্পের কথা বলা নতুন কিছু নয়। এর আগেও তিনি বিভিন্ন ইস্যুতে কমলাকে উদ্দেশ করে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেন। দক্ষিণ ফ্লোরিডায় একটি ধর্মীয় সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ইহুদিদের পছন্দ করেন না। তিনি একজন ইহুদিবিরোধী। তিনি ইসরায়েলও পছন্দ করেন না। এটি এমনই এবং সর্বদা এমনই হতে চলেছে। কমলা কিছুই পরিবর্তন করতে যাচ্ছেন না।

ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক কথা সত্ত্বেও কমলা হ্যারিসের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। অনেক রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী তাকে সমর্থন জানাচ্ছেন। সরসরি তাকে অর্থ দিয়েও সহায়তা করছেন। তার প্রচারের জন্য এক সপ্তাহে ২০ কোটি ডলার (প্রায় ২ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা) ডোনেশন জমা পড়েছে।

গত মাসের শেষ দিকে হ্যারিসের ডেপুটি প্রচার ম্যানেজার রব প্ল্যাহার্টি সামাজিকমাধ্যম এক্সে পোস্ট করে বলেন, ‘আমরা গত এক সপ্তাহ ধরে প্রচার শুরু করেছি। এর মধ্যে কমলা হ্যারিস ২০ কোটি ডলার তুলে ফেলেছেন। ৬৬ শতাংশই হলেন নতুন ডোনার। আমরা ১৭ হাজার নতুন স্বেচ্ছাসেবীকেও সই করিয়েছি।’

এদিকে এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, ৫ নভেম্বরের নির্বাচনের ফল নির্ধারণী ব্যাটেলগ্রাউন্ড রাজ্যগুলোয় ট্রাম্পের সঙ্গে হ্যারিসের ব্যবধান কমে এসেছে। এমারসন কলেজ ও দ্য হিল পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ চারটি রাজ্যে ট্রাম্প সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। অ্যারিজোনায় ট্রাম্পের ৪৯ শতাংশের বিপরীতে হ্যারিস ৪৪, জর্জিয়ায় ট্রাম্প ৪৮ ও হ্যারিস ৪৬ শতাংশ, মিশিগানে ট্রাম্প ৪৬ ও হ্যারিস ৪৫ এবং পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্প ৪৮ ও হ্যারিস ৪৬ সমর্থন পেয়েছেন।

উইসকনসিনে ট্রাম্প ও হ্যারিস উভয়ই পেয়েছেন ৪৭ শতাংশ সমর্থন। নিউইয়র্ক টাইমস/সিয়েনা কলেজের জরিপের ফলে দেখা যায়, ট্রাম্প হ্যারিসের চেয়ে মাত্র ২ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। যেখানে আগে বাইডেনের চেয়ে ৮ শতাংশে এগিয়ে ছিলেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসের নাম সামনে আসার পর তাকে বামপন্থি ও উন্মাদ আখ্যা দিয়েছিলেন দেশটির সাবেক এ প্রেসিডেন্ট। অতি-উদারপন্থি কমলা হ্যারিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধ, বিশৃঙ্খলা, মারপিট এবং মৃত্যু ডেকে আনবে বলে প্রচার চালান তিনি। তার পাল্টা হিসেবে ট্রাম্পকে যৌন হেনস্তকারী আখ্যা দিয়ে রিপাবলিকান প্রার্থীকে একহাত নিয়েছেন কমলা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাভার শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক, কাজে ফিরেছে শ্রমিকরা

মণিপুরে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক আহ্বান

হলান্ডকে নিয়ে রিয়াল-সিটির টানাটানি

‘আলো আসবেই’ নিয়ে মুখ খুললেন গ্রুপের অ্যাডমিন শামীমা তুষ্টি

যুবদল নেতার ওপর স্বেচ্ছাসেবক দলের হামলা

ইতালির মোনফ্যালকনে বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা

কোটা আন্দোলনে শহীদদের তালিকা কবে হবে জানালেন উপদেষ্টা নাহিদ

ইসরায়েলের এত অস্ত্র এলো কোথা থেকে?

সীমান্তে ফেলানীর মতো হত্যাকাণ্ড দেখতে চাই না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে / বিশেষ অভিযানে যৌথবাহিনী

১০

সন্ধ্যায় দেশে ফিরছেন আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া ১৪ বাংলাদেশি

১১

তরুণীকে হত্যার ঘটনায় ক্ষেপলেন এরদোয়ান, নিন্দা জানাল যুক্তরাষ্ট্রও

১২

রাজশাহীতে বস্তাভর্তি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

১৩

রূপপুর পরমাণু প্রকল্প নিয়ে সরকারের অবস্থান জানালেন অর্থ উপদেষ্টা

১৪

গণভবন জাদুঘর হলে যা থাকবে সেখানে

১৫

হাথুরুসিংহের ফেরার তারিখ জানাল বিসিবি

১৬

বিজিবি সদস্যদের যেসব নির্দেশনা দিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৭

নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে লুট হওয়া ৫৩টি অস্ত্র উদ্ধার 

১৮

মেসি-রোনালদোর কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পান কেইন

১৯

ভারতে ভয়াবহ নেকড়ে আতঙ্ক, দেওয়া হলো গুলির নির্দেশ

২০
X